জমা করে রাখা গল্পের বইগুলো সব গতকাল শেষ হয়ে গেছে , আজকে আর কিছু না পেয়ে ডায়েরি পড়তে বসলাম । এই ডায়েরি জিনিসটা আসলেই অনেক বড় বিশ্বস্ত বন্ধু - সেই ক্লাস সিক্স থেকে আজ পর্যন্ত সব কথা সে জানে , কিন্তু কাউকে কোন দিন বলবে না - সাত বছরের স্মৃতি কি সুন্দর করে গোপনে রেখে দিয়েছে। সবকিছুই আছে সেখানে - কোন বই পড়ে হাসা , কোন বই পড়ে কান্না , কখনও রাস্তায় ছোট বাচ্চাকে ঠেলাগাড়ি ঠেলতে দেখে কষ্ট পাওয়া , কখনও পরীক্ষার ব্যপারে টেনশন , কখনও আম্মুর সাথে রাগ - আবার সেই রাগ ভাঙ্গাতে কোথাও বেড়াতে যাওয়া বা নতুন কোন গল্পের বই উপহার পাওয়া ...।
তবে সবচেয়ে অবাক করা এবং আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলো হলো ২০১৩ সালকে ঘিরে , শাহবাগ আন্দোলনকে ঘিরে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিনের ডায়েরিতে আছে সায়েন্স কংগ্রেস নিয়ে আলাপ - কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসের পাঁচ তারিখ থেকেই সবকিছু কেমন যেন পরিবর্তন হয়ে গেল। খবরটা দুপুরের হলেও আমি পেয়েছিলাম রাতে - অবাক বিস্ময়ে শুনেছিলাম কসাই কাদেরের ফাসি হয়নি। এরপর ? পরের দিন জানলাম শাহবাগ আন্দোলনের কথা। ব্যস , কোনোরকমে মা কে রাজি করিয়ে ছুটে গেলাম শাহবাগে। এরপর তো একটানা শাহবাগে থাকা , কলেজ টাইম বাদে আর বাবা বাসায় থাকার দিনগুলো বাদে প্রায় সবসময় ই।
তখন ক্যামেরা ছিল না যে শাহবাগের দিনগুলোর ছবি বন্দী করে রাখব - তাই দুচোখ ভরে দেখতাম শাহবাগ কে , মনের ক্যামেরায় বন্দি করে রাখতাম চোখের সামনে জাগ্রত ইতিহাস কে। ডায়েরীতে লেখালেখির মধ্যে ইতিহাস কে ধরে রাখতাম ।একদিন ফেসবুক ব্যবহার করা শুরু করলাম , যে সময়টা বাসায় থাকতাম - শাহবাগের সাথেই থাকতাম ।ফেসবুক আইডি গত বছর খোলা হলেও ব্যবহার করা হত না , ছয় ফেব্রুয়ারি প্রথম স্ট্যাটাস দিলাম আমার আইডি তে , প্রথম স্ট্যাটাস ই হল রাজাকারের ফাসি চেয়ে। এর আগে পর্যন্ত আমার লেখালেখি কলম আর ডায়েরির পাতাতেই সীমাবদ্ধ ছিল - এখন নতুন যুক্ত হল কিবোর্ড।অনলাইনে জামাতিদের সাথে তর্ক করতাম আর প্রতি মুহূর্তে শাহবাগের পেজ গুলোর খবর দেখতাম আর শেয়ার করতাম।
এইসবের মধ্যে দিয়ে কবে শাহবাগ কে অনেক অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি জানি না। শাহবাগের প্রশ্নে আমি আসলেই চরমপন্থী , সব কিছু নিয়ে কথা আমি সহ্য করতে পারব - মুক্তিযুদ্ধ , শাহবাগ এই বিষয়গুলো নিয়ে কোন উল্টা- পাল্টা কথা আমি সহ্য করতে পারি না। শাহবাগের প্রতি এই ভালোবাসার কারণে একদিন কলেজ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হতে হল , এককালীন বেষ্ট ফ্রেন্ড প্রতিপক্ষে পরিণত হল , নিজের বাবার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হল। তবে যতই বাধা আসে , ততই শাহবাগ কে আরও বেশি করে বুকে জড়িয়ে ধরি যেন আমি। মা ,একাত্তরের দিনগুলি , একাত্তরের চিঠি বইগুলোকে নতুন করে আমার সামনে জাগ্রত করে দিল শাহবাগ । বুকের মধ্যে লুকিয়ে থাকা আগুন কে জ্বলে উঠতে সাহায্য করল শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর। এই গণজাগরণ মঞ্চ আমাকে শেখাল - শহীদ রুমী - বদি - আজাদদের প্রতি শ্রদ্ধাবনত হয়ে চোখের পানিতে ভাসলেই শুধু চলবে না , এই ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বদলা নেবার জন্য দুর্জয় স্লোগানে -মিছিলে রাজপথে নামতে হবে। একের পর এক রাজাকারের ফাসির রায় আমাকে শেখাল - হ্যা , আমরা পারি। আমরা স্বাধীন বাংলার মাটিতে রাজাকারের দম্ভ চূর্ণ করতে পারি। মা জাহানারা ইমামের স্বপ্ন নিয়ে রাজপথে নামতে পারি।
ডায়েরীটা পড়তে পড়তে হটাত লক্ষ্য করলাম - এটা এখন আর একটা কিশোরী মেয়ের ডায়েরি নেই। দেশের নানা ঘটনা , মিছিল - মীটিং এর কাহিনী আর প্রতিমুহূর্তে অন্তরে বাচিয়ে রাখা রাজাকারের ফাসির দাবি , এই দিয়ে ভরে উঠেছে ডায়েরীর প্রত্যেকটা পাতা। শাহবাগ - এখন শুধু একটা জায়গার নাম নয় - একটা চেতনার নাম , একটা মুক্তির নাম , একটা ভালোবাসার নাম। আর তাই রাজাকারের ফাসি না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের এই আন্দোলন থামবে না। আমরা হেরে যাব বলে স্বপ্ন দেখি নি , তীরহারা ঢেউএর সাগর পাড়ি দেয়ার শপথ নিয়ে রাজপথে নেমেছি। আর তাই বাংলার আকাশের সূর্য রাজাকারের ফাসির আনন্দে হেসে ওঠার দিনটির অপেক্ষায় আছি , রাজাকারের ফাসির দাবিতে অটল আছি - থাকব। কাদের কসাই এর ফাসি টা হতে আর কত দেরি ?????
শাহবাগে রাতভোর , স্মৃতিতে একাত্তর - নব ইতিহাসের সাক্ষী রইল প্রজন্ম চত্বর...
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু। জয় প্রজন্ম , জয় শহীদজননী , জয় গণজাগরণ মঞ্চ। জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার।
তবে সবচেয়ে অবাক করা এবং আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলো হলো ২০১৩ সালকে ঘিরে , শাহবাগ আন্দোলনকে ঘিরে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিনের ডায়েরিতে আছে সায়েন্স কংগ্রেস নিয়ে আলাপ - কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসের পাঁচ তারিখ থেকেই সবকিছু কেমন যেন পরিবর্তন হয়ে গেল। খবরটা দুপুরের হলেও আমি পেয়েছিলাম রাতে - অবাক বিস্ময়ে শুনেছিলাম কসাই কাদেরের ফাসি হয়নি। এরপর ? পরের দিন জানলাম শাহবাগ আন্দোলনের কথা। ব্যস , কোনোরকমে মা কে রাজি করিয়ে ছুটে গেলাম শাহবাগে। এরপর তো একটানা শাহবাগে থাকা , কলেজ টাইম বাদে আর বাবা বাসায় থাকার দিনগুলো বাদে প্রায় সবসময় ই।
তখন ক্যামেরা ছিল না যে শাহবাগের দিনগুলোর ছবি বন্দী করে রাখব - তাই দুচোখ ভরে দেখতাম শাহবাগ কে , মনের ক্যামেরায় বন্দি করে রাখতাম চোখের সামনে জাগ্রত ইতিহাস কে। ডায়েরীতে লেখালেখির মধ্যে ইতিহাস কে ধরে রাখতাম ।একদিন ফেসবুক ব্যবহার করা শুরু করলাম , যে সময়টা বাসায় থাকতাম - শাহবাগের সাথেই থাকতাম ।ফেসবুক আইডি গত বছর খোলা হলেও ব্যবহার করা হত না , ছয় ফেব্রুয়ারি প্রথম স্ট্যাটাস দিলাম আমার আইডি তে , প্রথম স্ট্যাটাস ই হল রাজাকারের ফাসি চেয়ে। এর আগে পর্যন্ত আমার লেখালেখি কলম আর ডায়েরির পাতাতেই সীমাবদ্ধ ছিল - এখন নতুন যুক্ত হল কিবোর্ড।অনলাইনে জামাতিদের সাথে তর্ক করতাম আর প্রতি মুহূর্তে শাহবাগের পেজ গুলোর খবর দেখতাম আর শেয়ার করতাম।
এইসবের মধ্যে দিয়ে কবে শাহবাগ কে অনেক অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি জানি না। শাহবাগের প্রশ্নে আমি আসলেই চরমপন্থী , সব কিছু নিয়ে কথা আমি সহ্য করতে পারব - মুক্তিযুদ্ধ , শাহবাগ এই বিষয়গুলো নিয়ে কোন উল্টা- পাল্টা কথা আমি সহ্য করতে পারি না। শাহবাগের প্রতি এই ভালোবাসার কারণে একদিন কলেজ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হতে হল , এককালীন বেষ্ট ফ্রেন্ড প্রতিপক্ষে পরিণত হল , নিজের বাবার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হল। তবে যতই বাধা আসে , ততই শাহবাগ কে আরও বেশি করে বুকে জড়িয়ে ধরি যেন আমি। মা ,একাত্তরের দিনগুলি , একাত্তরের চিঠি বইগুলোকে নতুন করে আমার সামনে জাগ্রত করে দিল শাহবাগ । বুকের মধ্যে লুকিয়ে থাকা আগুন কে জ্বলে উঠতে সাহায্য করল শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর। এই গণজাগরণ মঞ্চ আমাকে শেখাল - শহীদ রুমী - বদি - আজাদদের প্রতি শ্রদ্ধাবনত হয়ে চোখের পানিতে ভাসলেই শুধু চলবে না , এই ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বদলা নেবার জন্য দুর্জয় স্লোগানে -মিছিলে রাজপথে নামতে হবে। একের পর এক রাজাকারের ফাসির রায় আমাকে শেখাল - হ্যা , আমরা পারি। আমরা স্বাধীন বাংলার মাটিতে রাজাকারের দম্ভ চূর্ণ করতে পারি। মা জাহানারা ইমামের স্বপ্ন নিয়ে রাজপথে নামতে পারি।
ডায়েরীটা পড়তে পড়তে হটাত লক্ষ্য করলাম - এটা এখন আর একটা কিশোরী মেয়ের ডায়েরি নেই। দেশের নানা ঘটনা , মিছিল - মীটিং এর কাহিনী আর প্রতিমুহূর্তে অন্তরে বাচিয়ে রাখা রাজাকারের ফাসির দাবি , এই দিয়ে ভরে উঠেছে ডায়েরীর প্রত্যেকটা পাতা। শাহবাগ - এখন শুধু একটা জায়গার নাম নয় - একটা চেতনার নাম , একটা মুক্তির নাম , একটা ভালোবাসার নাম। আর তাই রাজাকারের ফাসি না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের এই আন্দোলন থামবে না। আমরা হেরে যাব বলে স্বপ্ন দেখি নি , তীরহারা ঢেউএর সাগর পাড়ি দেয়ার শপথ নিয়ে রাজপথে নেমেছি। আর তাই বাংলার আকাশের সূর্য রাজাকারের ফাসির আনন্দে হেসে ওঠার দিনটির অপেক্ষায় আছি , রাজাকারের ফাসির দাবিতে অটল আছি - থাকব। কাদের কসাই এর ফাসি টা হতে আর কত দেরি ?????
শাহবাগে রাতভোর , স্মৃতিতে একাত্তর - নব ইতিহাসের সাক্ষী রইল প্রজন্ম চত্বর...
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু। জয় প্রজন্ম , জয় শহীদজননী , জয় গণজাগরণ মঞ্চ। জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন