মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৩

বিজয় আনন্দ বুকে নিয়ে চূড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষা। কসাই কাদেরের ফাসি দেখার অপেক্ষা

একটানা দুইদিন পর অনলাইনে আসলাম । এসে অনেকগুলো খবরের মধ্যে সবচেয়ে খুশির যে খবর টা পেলাম তা হল - আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতরা নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হয়েছে । যাক, একটা অনেক বড় অপমানের অবসান হল আমাদের - আর কখনও এই যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে স্বাধীন বাংলার পতাকা দেখতে হবে না , আর কখনও ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা বাংলার রাষ্ট্রক্ষমতায় কোন যুদ্ধাপরাধীকে দেখতে হবে না। আর কোনোদিন দেখতে হবে না ত্রিশ ...লাখ শহীদের রক্তে ভেজা পথ মাড়িয়ে কোন যুদ্ধাপরাধী রাষ্ট্রক্ষমতায় বসেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে মাথা উঁচু করে আমরা বলতে পারব আমাদের বাংলাদেশে আর কখনও কোন যুদ্ধাপরাধী নির্বাচনের সুযোগ পাবে না।

সোমবার স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (অধ্যাদেশ) (সংশোধন) আইন ২০১৩ বিল উত্থাপনের পর তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।এই বিল পাসের ফলে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্তরা কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত আটজনের সাজা হয়েছে, যাদের পাঁচজনই জামায়াতে ইসলামীর নেতা। তারা হল- সাবেক আমির গোলাম আযম, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান। বিএনপি নেতাদের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দণ্ডিত হয়েছে- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও সাবেক নেতা আব্দুল আলীম।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে কেউ সাজাপ্রাপ্ত হলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য হবেন। আর সংশোধিত আইনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাজাপ্রাপ্তদেরও এর আওতায় আনা হয়েছে।

জানি , জেগে উঠতে অনেক দেরি করে ফেলেছিলাম আমরা - বিয়াল্লিশ বছর ধরে অনেক কলঙ্কভার বহন করতে হয়েছে আমাদের বাংলা মা কে। কিন্তু অনেক দেরিতে হলেও আমরা জেগেছি। একের পর এক যুদ্ধাপরাধীর ফাসির রায় আসছে , এখন এদের নির্বাচন করার অধিকারও বাদ হল । এই যুদ্ধাপরাধীরা আর কখনও বাংলার মাটিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। এইসব কুলাঙ্গার দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষের জাগরন ই বাংলার মাটিতে এদের চূড়ান্ত পরাজয়ের ঘোষণা দেয়। বাংলার সাধারন কিশোর - কিশোরী , যুবক - যুবতী , অশীতিপর বৃদ্ধার মুখের দুর্জয় স্লোগান ই রাজাকারদের পরাজয়ের ভিত রচনা করে যায়।

আর এইসব বিজয়ের সাক্ষী হয়ে , বাঙ্গালির হৃদয়ের রক্তে লেখা দাবির সাক্ষী হয়ে , অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উচ্চারিত জয় বাংলা স্লোগানের সাক্ষী হয়ে বেঁচে থাকে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর। জেগে থাকে শাহবাগের সৈনিকেরা - আলোর মশাল হাতে ছুটে চলে বাংলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে প্রতি ঘরে সচেতনতার আলো ছড়াতে। নবচেতনার সাথী হয়ে সদা জাগ্রত শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর - চূড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষায় , কসাই কাদেরের ফাসি দেখার অপেক্ষায়।

জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু। জয় প্রজন্ম , জয় শহীদজননী , জয় গণজাগরণ মঞ্চ । জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন