মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৩

আমার প্রতি নিঃশ্বাসের বিষে , বিশ্বের যন্ত্রনার ভাষা...

প্রজন্ম চত্বরে জাফর ইকবাল স্যারের বক্তৃতাটা শুনে সেইদিনও কেঁদেছিলাম , আজও মাঝে মাঝেই ঐ বক্তৃতাটা শুনি আর কাঁদি, অনেক হতাশার মাঝেও স্যারের কথাগুলো আশা জাগায় , নতুন করে ভাবতে শেখায়। স্যার বলেছিলেন -"জাহানারা ইমামের ছবি আছে , জাহানারা ইমাম উপর থেকে দেখছেন ... আজকে ত্রিশ লক্ষ শহীদ উপর থেকে দেখছেন , আর বলছেন - থ্যাঙ্ক ইউ , থ্যাঙ্ক ইউ ... তোমাদেরকে ধন্যবাদ ...। আমরা অনেক সৌভাগ্যবান একটা জাতি। যখন বঙ্গবন...্ধুকে দরকার ছিল , বঙ্গবন্ধুকে পেয়েছি ... যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে , তাজউদ্দিন আহমেদ আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন , এখন তোমাদের দরকার তোমাদের পেয়েছি ... এই বাংলাদেশ কে আর কেউ হারাতে পারবে না ...। "

যখন থেকে রাজ রাণীর গল্প পড়ার স্তর থেকে বের হয়ে সবরকম গল্পের বই পড়া শুরু করেছি , তখন থেকে জাফর ইকবাল স্যার আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক। একজন কিশোরের মনের কথাগুলো স্যার কিভাবে বুঝেন জানি না, কিন্তু সত্যি ওনার বইগুলো পড়লে মনে হয় আমার যে এইরকম বকুলাপু হতে ইচ্ছা করে সেটা স্যার কিভাবে জানলেন ? আর সায়েন্স ফিকশনের ব্যাপারে যদি বলতে চাই - এত সুন্দর করে বিজ্ঞানকে আমাদের সামনে তুলে ধরা জাফর ইকবাল স্যার ছাড়া আর কারো পক্ষে সম্ভব না। আমেরিকায় নিশ্চিত জীবন সবকিছু ছেড়ে স্যার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ কে আঁকড়ে পরে আছেন .....।


কত গৌরব তিনি বয়ে এনেছেন আমাদের বাংলাদেশের জন্য তার কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। কতবার সারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন তা হিসেব করা যাবে না। আমি গর্বিত যে আমি সেই শাহবাগ আন্দোলনের সৈনিক যে শাহবাগ আন্দোলনে জাফর ইকবাল স্যার এসেছিলেন। আমি গর্বিত যে জাফর ইকবাল স্যারের মত একজন মানুষ আমাদের বাংলাদেশে আছেন। আমি সত্যি গর্বিত যে সবসময় লড়াই করে মাথা উঁচু করে থাকা একজন মানুষকে আমরা পেয়েছি। অন্যায়ের সাথে কখনও আপোষ না করা জাফর ইকবাল স্যারকে অনেক অনেক শ্রদ্ধা করি আমি। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কি হারাল তা তারা নিজেরাও হয়ত এখনও অনুভব করতে পারছে না...।

কাদের কসাই এর ফাসির পূর্ণাঙ্গ রায়টা নাকি কয়েকদিনের মধ্যে প্রকাশ হবার কথা ? রায় লেখা শেষ তারপরেও এত দেরি কেন ? তাড়াতাড়ি রায়টা প্রকাশ হোক , এত খারাপ খবরের মাঝে একটা ভাল খবর আসুক , একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। হরতাল , অবরোধে স্কুলছাত্রীর চোখ থেকে রক্ত গড়িয়ে পরার ছবি দেখে আজকে ঠিক ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখের ঘটনা মনে পরে গেল। আমিও সেদিন কলেজে যাচ্ছিলাম , চোখের এক ইঞ্চি উপরে থেকে ফেটে গিয়ে এক ই ভাবে আমার কলেজ ড্রেসও রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল। হোক দুইটা আক্রমন দুইরকম , আক্রমন কারী তো সেই একই ...। আমি নাহয় প্রজন্ম চত্বরের সৈনিক , এই মেয়েটার কি অপরাধ ছিল ? ছবিটা দেখে আমার প্রত্যেক টা সেলাইয়ের ব্যাথা মনে পরছিল ।। কষ্টের প্রত্যেকটা মুহূর্ত মনে পরছিল...।

এই সবকিছুর সফলতা সেদিনই হবে যেদিন এতগুলো রাজাকারের ফাসির রায় , জামাতের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি কাদের কসাই এর ফাসিটা কার্যকরও হবে। যেদিন বিজয় মিছিলে স্লোগান হবে - "শাহবাগের জয় হল , কসাই এর ফাসি কার্যকর হল" - সেদিন সব অপমানের , সব রক্তের প্রতিশোধ নেয়া হয়ে যাবে । সেই সুন্দর দিনটির অপেক্ষায় , জীবনের শ্রেষ্ঠ সেই বিজয় মিছিল করার অপেক্ষায় ...।।

জয় বাংলা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন