বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৩

আজো কেন তোমার বুকে ঘুরছে তারা একাত্তরের দালাল যারা , জবাব তোমার দিতেই হবে মা .........

আজকে ঈদের দিন। সবাই নিজের মত করে দিনটা কাটাচ্ছি , তাইনা ? অনেক আনন্দ , অনেক সাজগোজ , ঘোরাফেরা - কোন কিছুতেই কমতি নেই। আচ্ছা , ঈদ তো সবার জন্য- কিন্তু কত মানুষের আজকে নেই ঈদের আনন্দ। সে হিসাব কে রাখবে ? না , আমরা কেউ একা তাদের দুঃখ কষ্ট দূর করতে পারব না - আমাদের বয়সী বা আমাদের চেয়ে অনেক ছোট যেসব শিশুরা পথে পথে , বাড়িতে -বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক টুকরা মাংসের আশায় , তাদের সবাই কে একটু শান্তি দেয়া আমাদ...ের কারো একার পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু সবাই মিলে ছোট ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ই তো পারি ওদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে।

নিজেদের জন্য প্রতিনিয়ত কত টাকাই তো খরচ করেন - এক রাত মোবাইলে একটু কম কথা বলুন না , একদিন কে এফ সি তে না গেলে কি হয় ? সেই টাকাটা জমিয়ে রেখে ঈদের সময় বাসার কাজের মেয়েটির হাতে একটা নতুন পোশাক তুলে দিন না । না , সেটা বসুন্ধরা সিটির আলো ঝলমলে দোকানের লেহেঙ্গা হতে হবে না - ওরা এত বেশি কিছু চায়না , শুধু মানুষের মত বাঁচতে চায় , আর বাঁচার জন্যই সংগ্রাম করে যায় প্রতিনিয়ত। নিজেদের বিলাশবহুল জীবন আর রাস্তার অপর পাশের বস্তিতে বেড়ে ওঠা আপনার সমবয়সী একজনের জীবনের দিকে তাকান , পার্থক্যটুকু খুঁচিয়ে দিতে পারেন আপনি ই।

আমি সবসনয় ই কুরবানি দেয়া দেখতে খুব ভয় পাই। পশু জবাই , রক্তে রাস্তাঘাট রঙ্গিন হয়ে যাওয়া আর তার মধ্যে কুরবানি দিতে যে কসাই গুলো আসে তাদের সারা গায়ে রক্ত মেখে উল্লাস - ভয়াবহ ব্যাপার মনে হয় আমার কাছে। ইসলামে কুরবানি দিতে বলা হয়েছে , পশুর রক্ত নিয়ে উল্লাস করতে বলা হয়েছে ? অন্তত আমার জানা নেই। তারপর ও আজকে কুরবানি দেয়ার সময় জোর করে সামনে ছিলাম , কারন কুরবানির পশুর চামড়া গ্রেনেড কারখানায় পাঠাতে দেয়া যাবে না। বাবাকে বলে লাভ নাই, আমি যতই বলি বাবা মানবে না যে কওমি মাদ্রাসা গুলো এক একটা গ্রেনেড কারখানা। আশেপাশের সবাই এমনভাবে তাকাচ্ছিল যেন আমি একটা এলিয়েন। যাই হোক , কুরবানি শেষ হওয়ার সাথে সাথে মাদ্রাসার কয়েকটা লোক এসে পরল চামড়া নেয়ার জন্য। আমি আস্তে করে আমাদের বাসায় কাজ করতে আসে যে খালামনি ওনাকে ডেকে বললাম চামড়া নিয়ে যাইতে। মেয়ে হওয়ার মনে হয় মাঝে মাঝে সুবিধাও আছে - কেউ পাল্টা কোন কথা বলল না , সবাই যার যার কাজ করতে লাগলো।

আজকে আমরা সব ধর্মের , সব মতের মানুষ মিলে উদযাপন করছি ঈদুল আজহা। আজকের পর তো আর কসাই লাগবে না , কাদের কসাই টাকে ফাঁসি দিয়ে দেয়া যায়না তাড়াতাড়ি? রাজাকারের ফাসির ঈদ করার অপেক্ষায় আছি , আন্দোলন চলছে সেই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। অন্তত কসাই কাদের এর ফাসি টা তো কার্যকর দেখার আশা করতেই পারি , নাকি ? এবারের বিজয় দিবস কাদের কসাই মুক্ত বাংলাদেশে পালন করতে চাই।আমার কাছে এবারের ঈদের সবচেয়ে খুশির খবর হল - কাদের কসাই , সাকা , কামরুজ্জামান , মুজাহিদ, সাইদি এবারের ঈদে কনডেম সেলে। যেই বাংলাদেশে একদিন এদের গাড়িতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়েছে , যেই বাংলাদেশে একদিন এদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কারনে মা জাহানারা ইমাম কে পর্যন্ত রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপবাদ পেতে হয়েছে , সেই বাংলাদেশে এদের কে ফাসির রায় শোনানো যাবে , কনডেম সেলে রাখা যাবে -এত বড় স্বপ্ন কে কবে দেখেছিল ২০১৩ এর আগে ? তবে ২০১৩ তে শুধু ফাসির রায় শোনানো নয় , এদের ফাসি কার্যকরের দাবি নিয়ে আমরা সংগ্রাম শুরু করেছি। শাহবাগের প্রতিটা আন্দোলনকারীর আজ একটাই প্রতীক্ষা -কসাই কাদের এর ফাসির ঈদ করার প্রতীক্ষা। অপেক্ষার অবসান হবে কবে ?

সব ধর্ম -মত নির্বিশেষে সকল বাঙ্গালিকে ঈদের শুভেচ্ছা।

জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু । জয় প্রজন্ম , জয় শহীদজননী , জয় গনজাগরন মঞ্চ। জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন