সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

একাত্তরের হাতিয়ার , গর্জে উঠুক আরেকবার , রাজাকারের ফাসি হোক,শহীদরা পাক ন্যায়বিচার

শায়লা আর সোহেল । নববিবাহিত দম্পতি । এক সপ্তাহ হল তাদের বিয়ে হয়েছে। দেশের অবস্থা ভাল নয় , বঙ্গবন্ধুর ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ পালিত হচ্ছে বাংলার সর্বত্র । শায়লা বঙ্গবন্ধুকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা করে । তাদের গ্রামে একবার এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু । শায়লা নিজের হাতে ফুলের মালা বানিয়েছিল , বঙ্গবন্ধুকে উপহার দেয়ার জন্য । কিন্তু শায়লার পরিবার বাধা দেয় । শায়লার বাবা স্থানীয় মসজিদের ইমাম । তার কথা হল , ঘরের মেয়ে বাইরে ...যাবে , বঙ্গবন্ধুর জন্য ফুলের মালা বানাবে , এইসব চলবে না । মেয়ে মানুষ থাকবে ঘরের মধ্যে , স্বামী - সন্তানের দেখাশোনা করবে , তাদের এত দেশ -রাজনীতি নিয়ে চিন্তার দরকার নেই। ওগুলো করবে পুরুষেরা । বাবার এরকম নীচ মানসিকতা শায়লাকে অনেক বেশি কষ্ট দেয় , অনেক বেশি কাঁদায় । বাবার পা জড়িয়ে ধরে শায়লা , একবার ,অন্তত একবার সে সেই মানুষ টিকে দেখতে চায় - বাঙ্গালির জন্য যিনি এত কষ্ট করছেন , এত জেল -জুলুম -অত্যাচার সইছেন শায়লার মত সাধারন মানুষদের জন্য । একবার সেই মানুষটিকে সামনে থেকে দেখতে চায় শায়লা । নিজের তৈরি ক্ষুদ্র উপহারটুকু সেই মহামানবটির হাতে দিতে চায় । কিন্তু মেয়ের কান্নায় বাবার মন গলে না । শায়লাকে এক ঘরে দরজা -জানালা আটকে বদ্ধ করে রাখা হয় । কত বড় সাহস , ইমাম বাড়ির মেয়ে হয়ে সে ঘরের বাইরে পা রাখতে চায়, বঙ্গবন্ধুকে দেখতে চায় , কত বড় সাহস একবার দেখ !!!

শায়লা একা বসে থাকে নিজের ঘরে । জানালা টা একটু খুলতে পারে অনেক কষ্টে ।ঐতো বঙ্গবন্ধু যাচ্ছেন , জানালার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট ভাইটির হাতে ফুলের মালাটা তাড়াতাড়ি দিয়ে দেয় শায়লা , যাতে এক দৌড়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে আসতে পারে এই ছোট্ট উপহারটুকু । এরপর শায়লা আর দেখতে পারেনা। বাইরের দরজায় বাবা -মা সবাই ধাক্কাধাক্কি করছে জানালা তাড়াতাড়ি বন্ধ করে রেখে তাকে উঠে যেতে হয় । বাবা এর মধ্যেই ঘরে ঢুকে পরেছে , ভাগ্যিস জানালা টা আগেভাগে বন্ধ করে দিতে পেরেছিল , তা না হলে বাবার প্রশ্নোত্তর এর মুখে পরতে হত । বাবা - মা ঘরে এসে ঢোকেন , সাথে আর একজন মানুষ , বাবার মতই মোল্লা ধরনের , কিন্তু বয়সে অনেক ছোট । মা শায়লাকে তাড়া দেন তাড়াতাড়ি উঠে যেতে , এই লোকটির সাথে বিয়ে হবে এখন শায়লার । এই মেয়েকে বাবা আর ঘরে রাখতে রাজি নয় । বিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি পার করে দিতে পারলেই বাঁচে । এরপর মেয়ের ঝামেলা জামাই সামলাবে । আর দেশের অবস্থা ভাল না , ১৬ বছরের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়াকে কেউ বেশি একটা খারাপ দৃষ্টিতে দেখবে না । হাজার হলেও ইমাম সাহেব বলে কথা , তিনি পাকিস্তানিদের সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করলেও সেটাই ঠিক , আর এটাতো নিজের মেয়েকে বিয়ে দেয়া । কেউ কোন সমালোচনা করার সাহস ও পাবে না ।

এই হল গত সপ্তাহের কাহিনী । এর ই মধ্যে শায়লা বউ হয়ে চলে এসেছে সোহেলের ঘরে । ঘর তো নয় , যেন রাক্ষসপুরী । চারদিকে খালি জিন্নাহ আর ইয়াহিয়ার ছবি , আর শুধু উর্দু কথাবার্তা । শায়লা কোনোদিন ও উর্দুতে কথা বলেনি , এই ভাষাটাকে সে ঘৃণা করে। এত রক্তের বিনিময়ে অর্জন যে বাংলা ভাষা , সেই বাংলাকে বাদ দিয়ে সোহেল দের পরিবার উর্দুকে কেন আঁকড়ে ধরে আছে , আর সারাক্ষন শায়লাসহ সমগ্র বাঙ্গালির প্রানপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুকে অপমান করার কাজে কেন লিপ্ত এই ব্যপার টাও শায়লা বোঝে না। তাহলে কি ওরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় না ? চিরকাল পাকিস্তানের পদানত হয়েই থাকতে চায় ? আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি গাইতে চায় না ? জয় বাংলা বলে চিৎকার করে উঠতে চায় না স্বাধীন বাংলাদেশে ? বঙ্গবন্ধু তো বলেই দিয়েছেন "রক্ত যখন দিয়েছি , রক্ত আরও দেব । এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ । এবারের সংগ্রাম , আমাদের মুক্তির সংগ্রাম , এবারের সংগ্রাম , স্বাধীনতার সংগ্রাম । জয় বাংলা ।" এই বজ্রকন্ঠ ডাক কি সোহেলদের কানে এখনও পৌছায় নি ? তাহলে কেন তারা এখন ও পাকিস্তানের দালালি করছে ? এইসব প্রশ্নের কোন উত্তর শায়লা খুজে পায়না ।

মে,১৯৭১ । গভীর রাত । শায়লা অনেক কষ্ট করে লুকিয়ে লুকিয়ে রেডিও টা অন করতে পেরেছে । স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ধরতে কষ্ট হয়েছে আরও বেশি , কারন গোপনীয়তা টা অবলম্বন করতে হয় এখানেই । স্বামী সোহেল পাশের ঘরে পাকিস্তানি মেজরদের সাথে কি এক আলোচনায় বসেছে । শায়লার মানতে কষ্ট হয় যে তার স্বামী রাজাকার । তার স্বামী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করছে , এই ব্যপার টা মানতে খুব কষ্ট হয় শায়লার । কিন্তু কষ্ট হলেও মানতে হয় কারন নিজের চোখে শায়লা সোহেলকে দেখেছে পাকিস্তানি মিলিটারিদের পথ চিনিয়ে নিয়ে যেতে , দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষদের বাড়িগুলো চিনিয়ে দিতে , এক এক করে গ্রামের শিক্ষিত মানুষগুলোকে ডেকে এনে নদীর পাড়ে গুলি করে মারতে । এসব শায়লা নিজের চোখে দেখেছে । একবার যদি সুযোগ পায় , এই বাড়ি থেকে পালিয়ে সোজা মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে চলে যাবে -ভাবে শায়লা। এইসব কিছুর প্রতিশোধ তাকে নিতেই হবে । দেশের সাথে সে বেইমানি করতে পারেনা । এই কথা ভাবতে ভাবতেই উঠে বসে গায়ে বোরখাটা জড়িয়ে নেয় শায়লা । বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে যায় , যাওয়ার আগে দরজায় কান পেতে শুনে যায় পাকিস্তানি মিলিটারিদের সাথে স্বামী সোহেল কি নিয়ে আলাপ করছে । সে বুঝতে পারে , মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমনের পরিকল্পনা চলছে সেখানে । পরিকল্পনাটা শুনে নিয়ে শায়লা বুঝতে পারে , আর তার পিছু হটার পথ নেই । এখন সে যদি মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পে গিয়ে সবাইকে সতর্ক করে না দেয় , তাহলে এই দেশমাতার কাছে চিরকাল অপরাধী হয়ে থাকবে ।

ঘর থেকে বের হয় শায়লা । অনেকদিন পর তার পথে নেমে আসা , অনেকদিন একা একা রাস্তায় নামেনি সে । কিন্তু এখন এসব চিন্তার সময় নয় । ওদের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছিল মুক্তিবাহিনী ক্যাম্প টা জঙ্গলের কিছুটা ভিতরে কোথাও । সেই অনুযায়ীই খুজতে শুরু করে শায়লা । এক সময় পেয়েও যায় । সেখানে গিয়ে সব জানানোর পর মুক্তিবাহিনী কমান্ডার সালেক শায়লা কে আপন বোনের মর্যাদা দিয়ে ক্যাম্পে থাকতে বলেন । সেই থেকে শায়লা হয়ে ওঠে সেই মুক্তিবাহিনী গ্রুপের অন্যতম একটি অঙ্গ । প্রায় প্রতিদিন ই সোহেলদের বাড়ি রেকি করতে যেত মুক্তিবাহিনী , সঙ্গে নিয়ে যেত শায়লাকে । কারন সোহেলদের বাড়িটা ছিল ঐ অঞ্চলে পাক মিলিটারিদের ক্যাম্প , আর এই ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে পারলে গ্রামটি মুক্তিবাহিনীর সম্পূর্ণ দখলে চলে আসবে । সেজন্যই এই কাজে অনেক বেশি সতর্কতা দরকার , আর শায়লা সেই কাজটিতেই সাহায্য করছে সবচেয়ে বেশি । ঐ বাড়ির আনাচে -কানাচে কে কোথায় থাকে , কোথায় কি হয় এসব খবর শায়লার চেয়ে ভাল কেউ জানেনা।

এক সপ্তাহ রেকি করা হল , এর মধ্যে অস্ত্রচালনাও অনেকটা আয়ত্বে এসে গেছে শায়লার । গ্রাম থেকে কিছুটা দূরের একটা যুদ্ধক্ষেত্রে সামনাসামনি পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধে অংশও নিয়েছে সে , যুদ্ধ করে বিজয়ীর বেশে ক্যাম্পে ফিরে এসেছে মুক্তিবাহিনী । এখন সামনে টার্গেট একটাই , এই গ্রামের পাক মিলিটারি ক্যাম্প মানে সোহেলদের বাড়িতে আক্রমন চালিয়ে ওদের পরাজিত করে বাংলার লাল -সবুজ পতাকা উড়িয়ে দিতে হবে । মুক্তিবাহিনী প্রস্তুত । মদের নেশায় মাতাল হয়ে পাকবাহিনী আর রাজাকার রা যখন পরে আছে , তখন ই ঠিক সময় বুঝে গর্জে ওঠে মুক্তিসেনাদের রাইফেল । এক এক করে মারা যায় অধিকানশ পাকিস্তানি , বাকিরা পলায়নপর । তারাও কিছুটা প্রতি আক্রমনের চেষ্টা করছে , কিন্তু মুক্তিবাহিনী , গেরিলা বাহিনীর আক্রমনের সামনে দাঁড়াতে পারছে না । সোহেল এলাকার রাজাকার প্রধান , সে এবং আর ও কিছু পাকিস্তানি -রাজাকার মুক্তিবাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে যায় । বাড়িটাকে সম্পূর্ণ ভাবে পাকিস্তানি এবং রাজাকার মুক্ত করার পর পতাকা লাগাতে গিয়ে সবার নজর পরে যে পতাকা ছিল শায়লার কাছে , কিন্তু শায়লাকে দেখা যাচ্ছে না । কোথায় গেল শায়লা ? সবাই খুজতে শুরু করে। সাথে সাথেই জঙ্গলের একটু ভিতরে থেকে শায়লার কণ্ঠের তীব্র আর্তনাদ ভেসে আসে । মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা স্পষ্ট শুনতে পায়না শায়লার কথাগুলো , কিন্তু শায়লাকে নিয়ে তখন খেলায় মেতে উঠেছিল পাকিস্তানি আর রাজাকার পিশাচেরা । শায়লার স্বামী বলছিল , বাঙালি মেয়ে ধর্ষণে কোন অপরাধ নেই। আর এই ফতোয়া তে আরও বেশি করে নির্যাতন করার সুযোগ পাচ্ছিল পাকিস্তানি বাহিনী । অসহায় মুক্তিযোদ্ধা শায়লা কাতর আর্তনাদে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল , এমন সময় মুক্তিবাহিনী গিয়ে হাজির হয় সেখানে । পাকিস্তানি -রাজাকারদের মেরে সহযোদ্ধা বোন শায়লাকে তারা উদ্ধার করে আনেন ।

এরপর মুক্তিযুদ্ধ চলে , শায়লার চিকিৎসা করানো হয় -অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠে শায়লা । আবারো মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় । একদিন দেশ স্বাধীন হয় । ইয়াহিয়া -নিয়াজি -ভুট্টো - পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জয় হয় বাংলার কৃষক -মুটে -মজুরদের । জয় হয় মুক্তিকামী বাঙ্গালির , জয় হয় মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর । সত্যি হয় বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠ বানী - "এবারের সংগ্রাম , আমাদের মুক্তির সংগ্রাম , এবারের সংগ্রাম , স্বাধীনতার সংগ্রাম।" স্বাধীনতার পর গ্রামে একটা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করানোর দায়িত্ব নেয় শায়লা। কিন্তু গ্রামবাসীর ভ্রুকুটির সামনে , বিশেষ করে তার নিজের পিতার ভ্রুকুটির সামনে শায়লা বাধ্য হয় ঢাকা চলে আসতে। এখানে এসে একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে থাকে মুক্তিযোদ্ধা শায়লা । অবাক বিস্ময়ে শায়লা চেয়ে দেখে , স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি একদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে , মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে ১৯৭১ এর রাজাকার রা। এসবের প্রতিবাদে আন্দলন করাতে মা জাহানারা ইমাম কে হতে হয় দেশছাড়া , পেতে হয় দেশদ্রোহীর অপবাদ । রক্তের বিনিময়ে শায়লারা যে পতাকা অর্জন করেছিলেন , সেই পতাকা ওড়ে সেইদিনের পরাজিত অপশক্তি রাজাকার দের গাড়িতে । নীরবে অশ্রুবিসরজন করে কাজে মনোযোগ দেন শায়লা ।

এভাবেই পার হয়ে যায় ৪২ টি বছর , অবশেষে শুরু হয় সেই রাজাকারদের বিচার কাজ । ১৯৭১ এর সেই পরাজিত অপশক্তিকে আবার পরাজিত করতে রাস্তায় নামে বাংলার আপামর জনতা। মুগ্ধ বিস্ময়ে শায়লা তাকিয়ে দেখেন শাহবাগের জনতার স্রোতের দিকে । কাজ শেষে প্রতিদিন শাহবাগে গিয়ে এই জাগ্রত সন্তানদের দিকে চেয়ে থাকেন শায়লা । লাখো তরুন -তরুণীর উদ্যত কণ্ঠে রাজাকারের ফাসি চাওয়ার স্লোগানের মধ্যে শায়লা খুজে পান নিজেকে। একাত্তরে তিনি যেমন পরিবারের বাধাকে অস্বীকার করে দেশের টানে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন , আজ ও জেগে আছে সেরকম অনেক তরুন -তরুণী , পরিবারের বাধা কে এক ঝটকায় দূরে ঠেলে দিয়ে যারা শাহবাগে ছুটে এসেছে ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা -বোনের রক্তের বদলা নেয়ার জন্য । এক ই ভালোবাসার টানে , এক ই শপথ বুকে নিয়ে , জীবন বাজি রেখে তারা আবার নেমেছে লড়াই এ ।গড়ে তুলেছে গনজাগরন মঞ্চ।এনে দিয়েছে সাইদি , মুজাহিদ , কসাই কাদের , কামরুজ্জামান এর ফাসির রায় । সেই যুদ্ধাপরাধীদের নাম বাতিল হয়েছে ভোটার তালিকা থেকে , জামাত নামক রাজাকার দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে । শায়লা মাতৃস্নেহে জড়িয়ে ধরেন শাহবাগের এই সন্তানগুলোকে । নিজের অজান্তেই তারা সবাই স্লোগান দিয়ে ওঠেন -"জয় বাংলা " বলে।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু । জয় প্রজন্ম , জয় জনতা, জয় গনজাগরন মঞ্চ। জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন