নিঝুম রাত । চারপাশ স্তব্ধ । সবাই যার যার ঘরে ঢুকে দরজা আটকে বসে আছে । দরজা - জানালার পর্দা টেনে দিয়ে নিচু ভলিউমে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চলছে রহিমা দের বাসায় । রহিমা , তার মা সালমা আর বাবা কাসেম থাকে এই বাড়িতে। রহিমার বড় দুই ভাই - বোন সালেহা আর করিম অনেক আগেই ওপারে চলে গেছে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিতে । রহিমার বয়স কম বলে বাবা - মা ওকে যেতে দেয়নি । তাই বলে সবার থেকে রহিমা কিন্তু পিছিয়ে নেই । এলাকায় যখন ই কোন মুক্তিবাহিনীর দল আসে , রহিমা খুজে খুজে তাদের কে বের করে নিজেদের বাসায় নিয়ে আসে । ওদের কে রান্না করে খাওয়ায় , যথাসাধ্য ভাল রাখার চেষ্টা করে । ওরা নিজেরাও অনেক গরিব - বাবা দর্জি , মা মানুষ জনের বাসায় কাজ করে টাকা রোজগার করে । তারপর ও রহিমা আর তার বাবা - মা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে পাকিস্তানিদের হাত থেকে প্রিয় বাংলাদেশ কে স্বাধীন করতে লড়তে আসা এই মুক্তিযোদ্ধাদের যাতে কোন কষ্ট না হয় । মাঝে মাঝে বোরখা পরে পাক বাহিনীর ক্যাম্পের উপর নজর রাখার কাজ টাও করে রহিমা । কোন সময় পাকিস্তানিরা পাহারা দেয় , কোন সময় মাতাল হয় , কোন সময় অসতর্ক থাকে সব খবর এনে মুক্তিযোদ্ধাদের দেয় রহিমা ।
সেদিন রাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শুনছিল রহিমা , মা সালমা আর বাবা কাসেম । তারা জানতেন তাদের ছেলে করিম এখন একটা গেরিলা দলের সাথে ঢাকায় আছে । মেয়ে সালেহাও আছে সেই গেরিলা দলে । ছেলে -মেয়ের সাফল্য কামনা করতে করতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবর শুনছিলেন সবাই । হঠাৎ শুনতে পেলেন বেতারে বলা হল , ঢাকাতে বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানিদের উপর মুক্তিযোদ্ধা গেরিলাদের অতর্কিত হামলা - মুক্তিবাহিনীর জয় - পাকিস্তানি বাহিনী পালানোর পথ পাচ্ছে না । খবর শুনে "জয় বাংলা " বলে সাথে সাথে চিৎকার করে স্লোগান দিয়ে ওঠে রহিমা । মা - বাবা মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকেন বার বছরের রহিমার দিকে । কত আগুন সে বুকে লুকিয়ে রেখেছে তার চোখে - মুখে তখন তা স্পষ্ট প্রভাতের মত ফুটে উঠেছে । এমন সময় হঠাৎ করে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ । মুহূর্তে সচকিত হয়ে ওঠে ঘরের সবাই । মা সালমা বেগম দরজার কাছে ছুটে যান । কে ? জিজ্ঞেস করলে পরিচিত কণ্ঠে উত্তর আসে - আম্মা দরজা খুলেন , আমি সাহেদ । সাহেদ হল সালেহা আর করিম এর সহযোদ্ধা । ওদের বাল্যকালের বন্ধু । একসাথেই ওরা যুদ্ধে গিয়েছে , একসাথেই ট্রেনিং নিয়েছে । আর যুদ্ধদিনের সহযাত্রীর চেয়ে ভাল বন্ধু দুনিয়াতে আর কেউ হতে পারে না। মা দরজা খুলে দেন ।
সাহেদ ঘরে ঢুকে একবার চারপাশে দেখে নেয় , এরপর বাবা কাসেমের কাছে গিয়ে বলে -বাবা,আজকের রাতের মধ্যে আমাদের অনেক গুলো পতাকা লাগবে , প্রায় ১০০ টার মত । বাবা আপনার কাছে লাল - সবুজ কাপড় আছে না , আজকে রাতের মধ্যে বানিয়ে দিতে পারবেন না ১০০ টা লাল - সবুজ পতাকা ? ভোরে সূর্যের আলো ফোটার আগেই আমি এসে নিয়ে যাব পতাকাগুলো । এই বলে সাহেদ এক দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় । বাবা রহিমার দিকে তাকান । মেয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে -বাবা , দোকানে চল । এখনি কাজ শুরু করতে হবে । ভোরের আগে ১০০ টা লাল - সবুজ পতাকা বানাতে হবে , আর তুমি চুপচাপ বসে আছ? চল । বাবাকে তাড়া দিয়ে ঘর থেকে বের করে ওদের দোকানের দিকে এগিয়ে যায় রহিমা । চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার । দরজার ঝাঁপ ফেলে কাজ করছে রহিমা আর তার বাবা । এদিকে রাস্তায় টহল দিতে বের হয়েছে পাক হানাদার বাহিনী আর তাদের পা - চাটা রাজাকার রা । রহিমাদের দোকানের দরজার সামনে এসে কিছুক্ষন দাঁড়ায় তারা । ভিতর থেকে সেলাই মেশিনের আওয়াজ আসছে । এত রাতে কি কাজ ? দরজা খোল ! - বলে দরজায় ধাক্কা দেয় এক রাজাকার । রহিমা আর তার বাবা পতাকা গুলো লুকানোর অনেক চেষ্টা করে , কিন্তু কিভাবে লুকাবে ? ঘর ভর্তি পতাকা ছড়ানো । এর মধ্যে পাকিস্তানিরা গুলি করে দরজা ভেঙ্গে ফেলে ভিতরে প্রবেশ করে । কোনোদিকে না তাকিয়ে প্রথমেই বাবা কাসেম কে গুলি করে মারে তারা । রহিমা পতাকা গুলোকে বুকে আঁকড়ে ধরে , অনেক শক্ত সেই বজ্রমুষ্টির বাধন ,পাকিস্তানিরা অনেক চেষ্টা করেও পতাকা গুলো রহিমার হাত থেকে কেড়ে নিতে পারে না । জীবিত রহিমার উপর বেয়োনেট চার্জ করে তারা । ছিঁড়ে - কুড়ে খায় রহিমার শরীরটিকে । একসময় রহিমার জীবনের স্পন্দন বন্ধ হয়ে আসে । তখন ও রহিমার হাতে মুঠো করে ধরা একটি লাল - সবুজ পতাকা , ঘরময় ছড়ানো লাল - সবুজের বিছানা ।
এদিকে ঢাকাতে তখন রণক্ষেত্রে সালেহা আর করিম । কিছুদিন আগে সালেহা কে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে গিয়েছিল এলাকার রাজাকার হাফিজ আলী । পাকিস্তানি আর রাজাকার দের অত্যাচারের , পৈশচিকতার স্মৃতিচিহ্ন বহন করে বেচে আছে সালেহা । ক্যাম্পের কাজের মেয়ে শায়লার সাহায্যে পালিয়ে আসতে পেরেছিল সালেহা অবশেষে , মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ফিরে আসতে পেরেছিল । আজকে গেরিলা পাক বাহিনীর বাঙ্কার উড়িয়ে দিতে এসেছে তাঁরা । চারপাশ থেকে তারা পাক - বাহিনীকে ঘিরে ফেলেছে , পাকিস্তানি আর রাজাকার গুলো শান্তিতে বসে ডিনার করছে , তারা কল্পনাও করতে পারে নি মুক্তিবাহিনী এত কাছে এসে পরেছে । কম্যান্ডারের একটি মাত্র কমান্ডের সাথে সাথেই একসাথে ফায়ার ওপেন করে সবাই । গুলিতে ,হ্যান্ড গ্রেনেডে কিছুক্ষনের মধ্যেই পাক বাহিনী আর রাজাকার সবার মৃতদেহ পরে থাকে সেখানে । সম্পূর্ণ সফল একটা অপারেশন করতে পেরে মুক্তিবাহিনীর সবাই অনেক খুশি , জয় বাংলা স্লোগানে মুহূর্তে কম্পিত হয়ে ওঠে আশেপাশের আকাশ - বাতাস ।
আসে ১৬ ই ডিসেম্বর , ১৯৭১ । বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে গ্রামে ফিরে আসে সালেহা আর করিম । এসে গ্রামের মানুষের কাছে জানতে পারে বাবা - মা , রহিমা কেউ আর বেঁচে নেই । সেদিন দোকানের দিকে গোলাগুলির শব্দ শুনে বাসা থেকে বেড়িয়েছিলেন মা , পাক বাহিনী সেই বৃদ্ধা মা কেও রেহাই দেয় নি । গুলিতে , বেয়নেটে , ধর্ষণে সেই মাকেও শেষ করেছিল সেদিন পাকিস্তানি মেজর আর তার তাবেদার রাজাকার বাহিনী । মা - বাবা - ছোট বোন সবাইকে হারিয়ে একজন আরেকজন কে জড়িয়ে ধরে সালেহা আর করিম । দুইজন মুক্তিযোদ্ধা ভাই -বোন বেঁচে থাকেন বোনের হাতে বানানো জাতীয় পতাকা গুলোকে জড়িয়ে ধরে । মা - বাবা আর ছোট বোনের শেষ স্মৃতি যে এই লাল - সবুজ পতাকা , শেষ উপহার যে এই প্রিয় বাংলাদেশ টা ।
বিয়াল্লিশ বছর পর ২০১৩ সালে এসে ১৯৭১ এর মত করে শাহবাগে আবার জেগে ওঠে শত শত সালেহা , করিম , রহিমা , কাসেম , সালমা । আবার জয় বাংলা ধ্বনিতে কাপিয়ে তোলে তারা বাংলার আকাশ - বাতাস । প্রতিপক্ষ কিন্তু সেই এক ই । বাংলার মাটিকে পাকিস্তানের দালাল যুদ্ধাপরাধী - জামাত - শিবির মুক্ত করতে আবার জেগে উঠে বাংলাদেশ । এই তরুনদের পরম ভালোবাসায় বুকে জড়িয়ে নেন মুক্তিযোদ্ধা সালেহা আর করিম । তাঁদের জ্বালিয়ে দেয়া প্রদীপের আলোয় বাংলার মাটি থেকে সব অপশক্তিকে দূর করবে শাহবাগের এই সৈনিকেরাই । কারন তারা যে আজ শপথ নিয়েছে - " এই পথে আজ জীবন দেব , রক্তের বদলা ফাঁসি নেব । "
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু । জয় প্রজন্ম , জয় শাহবাগ , জয় গনজাগরন মঞ্চ। জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার ।
সেদিন রাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শুনছিল রহিমা , মা সালমা আর বাবা কাসেম । তারা জানতেন তাদের ছেলে করিম এখন একটা গেরিলা দলের সাথে ঢাকায় আছে । মেয়ে সালেহাও আছে সেই গেরিলা দলে । ছেলে -মেয়ের সাফল্য কামনা করতে করতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবর শুনছিলেন সবাই । হঠাৎ শুনতে পেলেন বেতারে বলা হল , ঢাকাতে বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানিদের উপর মুক্তিযোদ্ধা গেরিলাদের অতর্কিত হামলা - মুক্তিবাহিনীর জয় - পাকিস্তানি বাহিনী পালানোর পথ পাচ্ছে না । খবর শুনে "জয় বাংলা " বলে সাথে সাথে চিৎকার করে স্লোগান দিয়ে ওঠে রহিমা । মা - বাবা মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকেন বার বছরের রহিমার দিকে । কত আগুন সে বুকে লুকিয়ে রেখেছে তার চোখে - মুখে তখন তা স্পষ্ট প্রভাতের মত ফুটে উঠেছে । এমন সময় হঠাৎ করে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ । মুহূর্তে সচকিত হয়ে ওঠে ঘরের সবাই । মা সালমা বেগম দরজার কাছে ছুটে যান । কে ? জিজ্ঞেস করলে পরিচিত কণ্ঠে উত্তর আসে - আম্মা দরজা খুলেন , আমি সাহেদ । সাহেদ হল সালেহা আর করিম এর সহযোদ্ধা । ওদের বাল্যকালের বন্ধু । একসাথেই ওরা যুদ্ধে গিয়েছে , একসাথেই ট্রেনিং নিয়েছে । আর যুদ্ধদিনের সহযাত্রীর চেয়ে ভাল বন্ধু দুনিয়াতে আর কেউ হতে পারে না। মা দরজা খুলে দেন ।
সাহেদ ঘরে ঢুকে একবার চারপাশে দেখে নেয় , এরপর বাবা কাসেমের কাছে গিয়ে বলে -বাবা,আজকের রাতের মধ্যে আমাদের অনেক গুলো পতাকা লাগবে , প্রায় ১০০ টার মত । বাবা আপনার কাছে লাল - সবুজ কাপড় আছে না , আজকে রাতের মধ্যে বানিয়ে দিতে পারবেন না ১০০ টা লাল - সবুজ পতাকা ? ভোরে সূর্যের আলো ফোটার আগেই আমি এসে নিয়ে যাব পতাকাগুলো । এই বলে সাহেদ এক দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় । বাবা রহিমার দিকে তাকান । মেয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে -বাবা , দোকানে চল । এখনি কাজ শুরু করতে হবে । ভোরের আগে ১০০ টা লাল - সবুজ পতাকা বানাতে হবে , আর তুমি চুপচাপ বসে আছ? চল । বাবাকে তাড়া দিয়ে ঘর থেকে বের করে ওদের দোকানের দিকে এগিয়ে যায় রহিমা । চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার । দরজার ঝাঁপ ফেলে কাজ করছে রহিমা আর তার বাবা । এদিকে রাস্তায় টহল দিতে বের হয়েছে পাক হানাদার বাহিনী আর তাদের পা - চাটা রাজাকার রা । রহিমাদের দোকানের দরজার সামনে এসে কিছুক্ষন দাঁড়ায় তারা । ভিতর থেকে সেলাই মেশিনের আওয়াজ আসছে । এত রাতে কি কাজ ? দরজা খোল ! - বলে দরজায় ধাক্কা দেয় এক রাজাকার । রহিমা আর তার বাবা পতাকা গুলো লুকানোর অনেক চেষ্টা করে , কিন্তু কিভাবে লুকাবে ? ঘর ভর্তি পতাকা ছড়ানো । এর মধ্যে পাকিস্তানিরা গুলি করে দরজা ভেঙ্গে ফেলে ভিতরে প্রবেশ করে । কোনোদিকে না তাকিয়ে প্রথমেই বাবা কাসেম কে গুলি করে মারে তারা । রহিমা পতাকা গুলোকে বুকে আঁকড়ে ধরে , অনেক শক্ত সেই বজ্রমুষ্টির বাধন ,পাকিস্তানিরা অনেক চেষ্টা করেও পতাকা গুলো রহিমার হাত থেকে কেড়ে নিতে পারে না । জীবিত রহিমার উপর বেয়োনেট চার্জ করে তারা । ছিঁড়ে - কুড়ে খায় রহিমার শরীরটিকে । একসময় রহিমার জীবনের স্পন্দন বন্ধ হয়ে আসে । তখন ও রহিমার হাতে মুঠো করে ধরা একটি লাল - সবুজ পতাকা , ঘরময় ছড়ানো লাল - সবুজের বিছানা ।
এদিকে ঢাকাতে তখন রণক্ষেত্রে সালেহা আর করিম । কিছুদিন আগে সালেহা কে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে গিয়েছিল এলাকার রাজাকার হাফিজ আলী । পাকিস্তানি আর রাজাকার দের অত্যাচারের , পৈশচিকতার স্মৃতিচিহ্ন বহন করে বেচে আছে সালেহা । ক্যাম্পের কাজের মেয়ে শায়লার সাহায্যে পালিয়ে আসতে পেরেছিল সালেহা অবশেষে , মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ফিরে আসতে পেরেছিল । আজকে গেরিলা পাক বাহিনীর বাঙ্কার উড়িয়ে দিতে এসেছে তাঁরা । চারপাশ থেকে তারা পাক - বাহিনীকে ঘিরে ফেলেছে , পাকিস্তানি আর রাজাকার গুলো শান্তিতে বসে ডিনার করছে , তারা কল্পনাও করতে পারে নি মুক্তিবাহিনী এত কাছে এসে পরেছে । কম্যান্ডারের একটি মাত্র কমান্ডের সাথে সাথেই একসাথে ফায়ার ওপেন করে সবাই । গুলিতে ,হ্যান্ড গ্রেনেডে কিছুক্ষনের মধ্যেই পাক বাহিনী আর রাজাকার সবার মৃতদেহ পরে থাকে সেখানে । সম্পূর্ণ সফল একটা অপারেশন করতে পেরে মুক্তিবাহিনীর সবাই অনেক খুশি , জয় বাংলা স্লোগানে মুহূর্তে কম্পিত হয়ে ওঠে আশেপাশের আকাশ - বাতাস ।
আসে ১৬ ই ডিসেম্বর , ১৯৭১ । বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে গ্রামে ফিরে আসে সালেহা আর করিম । এসে গ্রামের মানুষের কাছে জানতে পারে বাবা - মা , রহিমা কেউ আর বেঁচে নেই । সেদিন দোকানের দিকে গোলাগুলির শব্দ শুনে বাসা থেকে বেড়িয়েছিলেন মা , পাক বাহিনী সেই বৃদ্ধা মা কেও রেহাই দেয় নি । গুলিতে , বেয়নেটে , ধর্ষণে সেই মাকেও শেষ করেছিল সেদিন পাকিস্তানি মেজর আর তার তাবেদার রাজাকার বাহিনী । মা - বাবা - ছোট বোন সবাইকে হারিয়ে একজন আরেকজন কে জড়িয়ে ধরে সালেহা আর করিম । দুইজন মুক্তিযোদ্ধা ভাই -বোন বেঁচে থাকেন বোনের হাতে বানানো জাতীয় পতাকা গুলোকে জড়িয়ে ধরে । মা - বাবা আর ছোট বোনের শেষ স্মৃতি যে এই লাল - সবুজ পতাকা , শেষ উপহার যে এই প্রিয় বাংলাদেশ টা ।
বিয়াল্লিশ বছর পর ২০১৩ সালে এসে ১৯৭১ এর মত করে শাহবাগে আবার জেগে ওঠে শত শত সালেহা , করিম , রহিমা , কাসেম , সালমা । আবার জয় বাংলা ধ্বনিতে কাপিয়ে তোলে তারা বাংলার আকাশ - বাতাস । প্রতিপক্ষ কিন্তু সেই এক ই । বাংলার মাটিকে পাকিস্তানের দালাল যুদ্ধাপরাধী - জামাত - শিবির মুক্ত করতে আবার জেগে উঠে বাংলাদেশ । এই তরুনদের পরম ভালোবাসায় বুকে জড়িয়ে নেন মুক্তিযোদ্ধা সালেহা আর করিম । তাঁদের জ্বালিয়ে দেয়া প্রদীপের আলোয় বাংলার মাটি থেকে সব অপশক্তিকে দূর করবে শাহবাগের এই সৈনিকেরাই । কারন তারা যে আজ শপথ নিয়েছে - " এই পথে আজ জীবন দেব , রক্তের বদলা ফাঁসি নেব । "
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু । জয় প্রজন্ম , জয় শাহবাগ , জয় গনজাগরন মঞ্চ। জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন