শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৩

তীরহারা এই ঢেউএর সাগর পাড়ি দেব রে...

রক্তপলাশে ঢাকা বাংলার প্রকৃতি প্রতিমুহূর্তে সেজে উঠতে পারে নতুন রুপে... প্রতিমুহূর্তে মনে করিয়ে দেয় প্রজন্ম চত্বরের আগুনঝরা স্লোগান। রাতের আকাশের কালো চাদর ভেদ করে কি ছোট্ট গোল থালার মত একটা চাঁদ উঠেছে ? চন্দ্রস্নানে কি ব্যস্ত পৃথিবী ? শহরের যান্ত্রিক জীবনের মধ্যেও কোন এক জলাশয়ে কি সবার অগোচরে জ্যোৎস্না অপূর্ব দৃশ্যপট সৃষ্টি করছে? জানি না। কর্পোরেট শহরের ইট - কাঠ - পাথরের দেয়াল ভেদ করে রূপালী জ্যো...ৎস্নার আলো আমাদের কাছে পৌছায় না। আর যতটুকুই বা পৌছায় , তা এখন আর মনকে কোন কল্পনা , কোন রোমান্টিসিজমে মুগ্ধ করে না। ইট - কাঠের খাঁচার মধ্যে দিয়ে একটু একটু করে মেঘলুপ্ত সূর্যের মত দেখা দেয়া জ্যোৎস্না আমাকে মনে করায় , ত্রিশ লাখ শহীদ এখন আকাশের নক্ষত্র হয়ে আমাদের দেখছেন , মা জাহানারা ইমাম হয়ত মিশে আছেন এই ফোঁটা ফোঁটা চাঁদের আলোর মধ্যেই , হয়ত হাসছেন তাঁর পাগল ছেলেমেয়েদের কাজ দেখে ...এরা যে তাঁরই স্বপ্ন সফল করার জন্য লড়ছে।

আজকে রোমান্টিসিজমের সময় নয় , আজকে কবিতা লেখার সময় নয়। সময় কঠোর - কঠিন গদ্যে প্রতিবাদের ভাষা রচনা করার। পদ্য লালিত্যে ঝঙ্কার তোলার সময় অনেক পাওয়া যাবে , কিন্তু পাওয়া যাবে না আগুনচাপা ক্ষোভে জ্বলে ওঠার সময়টুকু। আর তাইত ভালোবাসা -মায়ার বাঁধনকে দূরে সরিয়ে দিয়ে আপন করে নিতে হয় যুদ্ধকে - যুদ্ধ - কঠিন , কর্কশ যুদ্ধ। স্বপ্নে জেগে থাকেন ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ বীরাঙ্গনা মা , রাতের আকাশে তাকালে প্রতিটা আলোকবিন্দু জানিয়ে দেয় শহীদ রুমী - বদি - আজাদেরা হারিয়ে যাননি , হারিয়ে যাননি সুরকার শহীদ আলতাফ মাহমুদ কিংবা শহীদ ক্রিকেটার জুয়েল।হারিয়ে যায়নি "আমার ভাইএর রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি..." প্রতি মুহূর্তে জেগে আছেন তাঁরা , তাকিয়ে আছেন শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের প্রতিটা যোদ্ধার দিকে - আশীর্বাদ ভরা , স্নেহভরা দৃষ্টিতে ... সে দৃষ্টিতে আগুনের মত জ্বলজ্বলে বাংলার লাল- সবুজ পতাকা।

মাননীয় বিচারক , কাদের কসাই এর ফাঁসি টা কার্যকরের জন্য এই পথে আর কত জীবন দিতে হবে বলুন। আর কত রক্ত দিতে হবে বলুন আমরা প্রস্তুত আছি। আশা - নিরাশার দোলাচলে দুলতে দুলতে একদিন কি আমরা আসলেই পাব কসাই কাদেরের ফাসির পূর্ণাঙ্গ রায় ? আসলেই কি একদিন কার্যকর হবে ফাসি ? যদি সত্যি হয় তাহলে সেদিন সত্যি বলছি সব নিয়ম -নীতিকে অস্বীকার করে জ্যোৎস্নারাতে নীরব নিথর বাংলার পথে নেমে আসব রুপার মত একটা নীল শাড়ি পরে। সব বাধা - বিধির বেড়াজাল ভেদ করে রাতের আধারের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে চিৎকার করব জয় বাংলা বলে। তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিতে আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়? আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ? কত ? আর কত ???

জয় বাংলা...।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন