সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৩

কোটি প্রান একসাথে জেগেছে অন্ধরাতে নতুন সূর্য ওঠার এইত সময়

সেই ফেব্রুয়ারি থেকে আজ ডিসেম্বর ... যুগ যুগান্তর ধরে অক্ষয় থাকার মত একটা ইতিহাস । কাদের কসাইয়ের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়ে গেছে , এখন যে কোন দিন ফাঁসি ...। দশ মাসের আন্দোলন এখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। এখন অনুভূতিটা অনেকটা সেই সময়ের মত , ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে যখন একের পর এক স্বাধীন হচ্ছিল বাংলাদেশের এক একটি এলাকা, স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছিল গোটা জাতি , যে কোন সময় পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করবে ...... মুক্তিবাহিনী -মিত্রবাহিনী প্রবেশ করেছে ঢাকায় ...। এখন ঠিক সেই অনুভূতিটা মনে হচ্ছে অনুভব করতে পারছি। কাদের কসাইয়ের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়ে গেছে... যে কোন সময় ফাঁসি।।

বায়ান্ন দেখিনি , উনসত্তর দেখিনি , একাত্তর দেখিনি ... দেখেছি শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর। তাই হেলায় হারাতে পারিনি ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার এই দুর্লভ সুযোগটিকে ...। অনেক অপপ্রচার , প্রতি পদে পদে অনেক বাধা সব উপেক্ষা করে বারবার ছুটে গিয়েছি শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে। আজকে মনে হচ্ছে সেই সব অপমান , সব শাস্তি সবকিছুর বদলা নেয়া হয়ে গেছে ... আজকে মনে হচ্ছে শহীদ দীপ , রাজীব , জাফর মুন্সি , জগতজ্যোতি , শান্ত তো এই দিনগুলোর জন্যই জীবন দিয়েছিলেন। আজকে দূর আকাশের কোন নক্ষত্র থেকে মা জাহানারা ইমাম আমাদের দিকে চেয়ে আছেন আর হাসছেন তাঁর পাগল ছেলেমেয়েদের কাজ দেখে...।

ত্রিশ লাখ শহীদ হাসছেন বিয়াল্লিশ বছরের কলঙ্কমুক্তির পথে প্রিয় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা দেখে...।বীরাঙ্গনা মা বিয়াল্লিশ বছর পর চোখের পানি মুছছেন সেই খুনি , ধর্ষকের ফাসি দেখে। ২০১৩ এর প্রজন্ম আনন্দে চিৎকার করে উঠছে জয় বাংলা বলে ... সেই ভি সাইন কে তো অবশেষে পরাজিত করা গেছে। এই দিনগুলো দেখার জন্যেই তো কিশোরী মেয়ে কলেজ ফাকি দিয়ে শাহবাগে ছুটে এসেছিল , প্রেমিক রাজাকার সমর্থক দেখে প্রেম ভেঙ্গে দিয়ে অঝোর অশ্রু মুছে কণ্ঠে দুর্জয় স্লোগান নিয়ে শাহবাগে ছুটে এসেছিল প্রেমিকা ... এই দিনগুলো দেখার জন্যেই তো চিরদিন পিঞ্জরাবদ্ধ থাকা মানুষগুলো দিনরাত শাহবাগে অবস্থান করেছিল... স্লোগানে মিছিলে উত্তাল করেছিল বাংলাদেশ ...।

হরতাল -অবরোধের কারণে বাবা বাসায়। প্রজন্ম চত্বরে যেতে পারছি না এই মুহূর্তে সে কারনে , কিন্তু মনটা প্রতি মুহূর্তে প্রজন্ম চত্বরেই চলে যাচ্ছে। কবে এই হরতাল -অবরোধ থামবে , কবে বাবা অফিসে যাবে আর আমি আবার শাহবাগে যাওয়ার সুযোগ পাব সেই অপেক্ষায় আছি। আর কিছুদিনের মধ্যেই কার্যকর হয়ে যাবে কাদের কসাইয়ের ফাসি। সেদিন কি করব জানি না শুধু জানি চিৎকার করব জয় বাংলা বলে। এই ডিসেম্বরে হায়েনারা আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। ১৪ ই ডিসেম্বর থেকে ১৬ ই ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যকর হোক কাদের কসাইয়ের ফাসি। এবারের ১৬ ই ডিসেম্বরে সংসদ ভবনের দক্ষিন প্লাজায় বিজয় -২০১৩ অনুষ্ঠানে বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিটে তিন লক্ষ বাঙালি এক হয়ে গাইব আমাদের প্রানের জাতীয় সঙ্গীত।

এবারের বিজয় দিবসে এই মধুর শব্দগুলো -"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি" উচ্চারন করতে চাই রাজাকারের ফাসির আনন্দাশ্রুর সাথে। সংসদ ভবনে প্রোগ্রামে যেতে পারি বা না পারি , বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিটে অবশ্যই গাইব প্রিয় জাতীয় সঙ্গীত। এই আহ্বান ছড়িয়ে দিন সারা বিশ্বের প্রতিটা বাঙ্গালির কাছে। প্রতি প্রানে এবার ছড়িয়ে যাবে রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশের প্রথম বিজয় দিবস । বিশ্ব রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ...শুভসূচনা হবে নতুন আগামির ... রাজাকার কাদের কসাইমুক্ত বাংলাদেশের শুভ পথচলা। অভিনন্দন বাংলাদেশ... অভিনন্দন শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর।

জয় বাংলা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন