রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

প্রজন্মের আহ্বান , নিপাত যাক পাকিস্তান

ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে এসেছে গণজাগরণ মঞ্চ। আন্দোলনের পথযাত্রায় শহীদ হয়েছেন যোদ্ধারা, সহযোদ্ধার মৃত্যুশোককে শক্তিতে পরিণত করে পরমুহূর্তেই রাজপথ কাঁপিয়েছেন আবার প্রজন্মযোদ্ধারা। স্বাধীনতাবিরোধীদের বার বার আক্রমণ , স্বার্থান্বেষীদের অযৌক্তিক বিরোধিতা - কোন কিছুই শাহবাগের এই মুক্তির পথযাত্রাকে থামাতে পারেনি। আজ আমরা গর্বভরে বলতে পারি আমরা মা জাহানারা ইমামের স্বপ্ন সফল করতে পেরেছি , স্বাধীন বাংলাদেশে খুনি রাজাকারের ফাসি কার্যকর হয়েছে । স্বপ্নের সিঁড়ি নির্মাণের যে প্রত্যয় নিয়ে প্রজন্ম চত্বরের যাত্রা শুরু হয়েছিল সে সিঁড়ি নির্মাণের শেষ ধাপটি সম্পন্ন  হয়েছে রাজাকারের ফাসির মধ্যে দিয়ে - সময় এই সিঁড়িটিকে স্থায়ী করে ধরে রাখার , সময় সেই সিঁড়ি বেয়ে নতুন আগামীর পথযাত্রার।

সেই নতুন পথযাত্রার পথেই বাধা হয়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল একাত্তরের পরাজিত হায়েনার দল পাকিস্তান। কিন্তু সে প্রচেষ্টা সফল হতে দেয়নি বাংলার প্রজন্ম। পুলিশের নির্লজ্জ আক্রমন সত্ত্বেও তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন, জয় বাংলা স্লোগানে কাঁপিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানিদের ভিত। এই প্রজন্মযোদ্ধাদেরকে হারাতে পারে এমন আগ্নেয়াস্ত্র এখনো আবিষ্কার হয়নি। শত শত আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়েও স্লোগানকন্যা শাম্মি আপু জয় বাংলা স্লোগানে সেদিন কাঁপিয়ে তুলেছেন গুলশান চত্বরকে। এক একজন সহযোদ্ধার উপরে পুলিশ কিরকম নির্মমভাবে আক্রমন করেছে , তারপরেও প্রজন্ম চত্বর জেগে আছে , জেগে থাকবে। শাহবাগ জেগে থাকবে প্রতিবাদের অগ্নিশিখা হয়ে , বাংলাদেশের হৃদয়স্পন্দন হয়ে।

পাকিস্তানি হায়েনাদের সাথে সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং মুক্তিযোদ্ধা , বীরাঙ্গনা মা , স্বাধীনতার পক্ষের অসংখ্য যোদ্ধাদের উপর আক্রমনের জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করে আজ গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে। একই সাথে ডাক এসেছে পাকিস্তানি হায়েনাদের সবরকম পন্য বর্জন করার। এ আহবান এখন সময়ের আহ্বান - পাকিস্তানি হায়েনাদের সাথে আর কোন রকম সম্পর্ক নয়। মনে রাখবেন আপনি যদি পাকিস্তানে তৈরি এক খণ্ড কাপড়ও গায়ে জড়ান , অস্বীকার করা হয় বীরাঙ্গনা মাকে , যে মায়ের শরীরে এক টুকরো সুতাও রাখতে দেয়নি হানাদারেরা। আপনি যদি পাকিস্তান থেকে আমদানি করা একটা দানাও মুখে দেন , অস্বীকার করা হয় সে শহীদকে , মৃত্যুর আগে যার রক্তভেজা ঠোঁটে এক ফোটা পানির স্পর্শ পেতে দেয়নি পাকিস্তানি হায়েনারা।

কাজেই বর্জন করুন পাকিস্তানি সবরকম পন্য , প্রতিষ্ঠান , ব্যাক্তি সব কিছুকে। জামাত - শিবির থেকে শুরু করে পাকিস্তানি লেহেঙ্গা , কুলসন মেকারনি থেকে শুরু করে সেজান জুস , জেনারেল ফ্যান থেকে শুরু করে পাকিস্তান এয়ারলাইন - ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করুন এসব কিছুকে। ইসলামি ব্যাঙ্ক এর সাথে লেনদেন না করলে আমাদের কোন ক্ষতি হবে না - রেটিনা , ফোকাসে কোচিং না করলেই যে কোথাও চান্স পাওয়া যাবে না এমন কথা লেখা নেই কোথাও। কাজেই সাড়া দিন প্রজন্ম চত্বরের ডাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আকড়ে ধরুন , পাকিস্তানকে বর্জন করুন। বিজ্ঞান ব্যবহারিক করার আগে দেখে নিন ম্যাগনিফাইং গ্লাসটি বা অন্য কোন সরঞ্জাম মেড ইন পাকিস্তান কিনা। পাকিস্তানের প্রতি জন্মগত ঘৃণাকে এবার ফুটিয়ে তুলুন জীবনের প্রতি পদক্ষেপে। দোকানে গিয়ে পাকিস্তানি পণ্যটা কিনতে অস্বীকার করুন , দেখবেন পাশে দাঁড়িয়ে যাবে অনেকেই। 

গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে চলছে দেশব্যাপী পাকিস্তানি পন্য বর্জনের প্রচারণা কাজ। এ আহ্বানে সাড়া দেয়ার অনুরধ রইল প্রত্যেক বাঙ্গালির প্রতি। স্বপ্নের সিঁড়িকে রক্ষা করতে হবে আমাদেরকেই , আর সেজন্যই নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে পাকিস্তানকে। পাকিস্তানকে ঘৃণা করি যখন তারা ফুল নিয়ে আসে তখনও। মাতৃভূমি বাংলাদেশের প্রশ্নে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স এ , স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথে কোনরকম আপোষের সুযোগ নেই। আমরা প্রথম জাতি , মায়ের মুখের ভাষাতে কথা বলার অধিকারও যাদের রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে। মনে রাখবেন , লাখো শহীদের রক্তেভেজা এ বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে আমাদেরই।এ লড়াই বাঁচার লড়াই - এ লড়াই জিততে হবে বাঙ্গালিকেই। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। জয় বাংলা...।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন