ইতিহাস আমাদের আত্মপরিচয় জানায় , আমাদের গৌরবময় ইতিহাস আমাদের বলতে শেখায় - "আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালোবাসি।" বাংলাদেশের ইতিহাস এক সাগর রক্তরাঙ্গা ইতিহাস। সেই রক্তের সমুদ্রে স্নান করে জন্ম নিয়েছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। একাত্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করে আমাদের জন্য এনে দিয়েছেন সোনালি স্বাধীন দেশ। সেই আত্মত্যাগের ফলেই আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। স্বাধীনতা...র আনন্দে আজ আমরা গাইতে পারি -জয় বাংলা বাংলার জয় , হবে হবে হবে - হবে নিশ্চয়। কোটি প্রাণ একসাথে জেগেছে অন্ধরাতে নতুন সূর্য ওঠার এইত সময়।
একাত্তরে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর কেটে গেছে বিয়াল্লিশটি বছর। বর্তমান প্রজন্মের জন্য , আমাদের জন্য জীবনের শ্রেষ্ঠ বিজয় দিবস হল ২০১৩ সালের আজকের দিনটি ।২০১৩ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর -স্মৃতির পাতায় অক্ষয় হয়ে থাকবে কারন এবারের বিজয় দিবসের আগে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর অর্জন করেছে মুক্তিযুদ্ধের পর শ্রেষ্ঠ বিজয় - রাজাকার কসাই কাদেরের ফাসি। আর এবারের বিজয় দিবসেই তিন লাখ বাঙালি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেই ঐতিহাসিক বিজয়ের ক্ষন বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিটে সমবেত কণ্ঠে গেয়েছি আমাদের প্রানের জাতীয় সঙ্গীত , গড়েছি নতুন বিশ্ব রেকর্ড - অতিক্রম করেছি ভারতকে।
সকালে হেঁটে যাওয়ার কারনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছাতে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। যাওয়ার পর পরই কোথা থেকে একখানা আইডি কার্ড ম্যানেজ হয়ে গেল , Fariha তাহার গেঞ্জি আমাকে দিয়ে দিলেন আর এরপর আমি কাজ খুঁজতে থাকলাম কি করা যায়। ছেলে সহযোদ্ধাদের উপর মাঝে মাঝে আসলেই রাগ হয়। এনারা এক একজন সব কাজ করে করে জ্বর বানায় ফেলছেন , আর মেয়ে হওয়ার কারনে আমি ফ্যামিলির বাধা পার হয়ে আসতে আসতেই শেষ। আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মানুষের যে সমুদ্র ছিল তা সত্যি প্রমাণ করে বাঙালি জেগে আছে। বাঙালি জেগে থাকবে আজীবন। জেগে থাকবে পাঁচ লক্ষ মানুষের শপথ - "যারা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থন করবে , আমরা তাদের বর্জন করব।"
আমরা ভলান্টিয়াররা দাঁড়িয়ে আছি , বাঁশের বেড়া ভেঙ্গে মানুষ ঢুকে যাচ্ছে ভিতরে। এত মানুষ , বিভিন্ন প্রবেশপথে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু বাঙালি। ছোট শিশু থেকে শুরু করে অশীতিপর বৃদ্ধা মা সবার কণ্ঠে মুহুর্মুহু স্লোগান - জয় বাংলা। সামনে মঞ্চে কখনও চলছে কনসার্ট ফর ফ্রিডম , কখনও চলছে জাগরনের গান , কখনও চলছে স্লোগান। এইদিকে আমরা ভলান্টিয়াররা হিমশিম খাচ্ছি এই জনতার স্রোতকে শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখতে। বিকাল ৪ টা ১৫ মিনিটে দেখানো হল পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের উপর প্রামান্য অভিনয়। সেই দলিল সাক্ষর হয়ার সাথে সাথে সারা উদ্যান যেভাবে জয় বাংলা বলে চিৎকার করে উঠেছিল তাতে স্বাধীনতাবিরোধী যে কোন অপশক্তি কেঁপে উঠতে বাধ্য।
এরপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষন। বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিট। যে যেখানে আছি সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম। গাইলাম আমাদের প্রিয় জাতীয় সঙ্গীত , অদ্ভুত মায়াভরা সেই গান -"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।" এরপর শপথ গ্রহণ - শপথ পাঠ করালেন মহান মুক্তিযুদ্ধের উপ- অধিনায়ক বীর উত্তম এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খোন্দকার। সত্যি এই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া আর শপথ গ্রহণের সময় চোখের কোণে নিজের অজান্তে অশ্রু জমা হচ্ছিল আর মনে হচ্ছিল , আমরা পেরেছি। আমরা আর কখনও হারব না। বাংলাদেশকে আর কেউ কখনও হারাতে পারবে না। বাংলাদেশ রক্তের দামে স্বাধীন হয়েছে , বাংলাদেশ অশ্রুর দামে স্বাধীন হয়েছে , বাংলাদেশ আন্দোলনের দামে রাজাকার কসাইমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ জেগে আছে।
শপথ গ্রহনের পর পতাকা হস্তান্তর। একাত্তরের দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম শফিউল্লাহ এবং বীর উত্তম এ কে খোন্দকার পতাকা হস্তান্তর করলেন এই প্রজন্মের দুইজন বীরযোদ্ধা ইমরান ভাইয়া এবং বাধন ভাইয়ার কাছে। প্রতীকী অর্থে তাঁরা রক্তের দামে কেনা এই পতাকা হস্তান্তর করলেন ২০১৩ এর প্রজন্মের কাছেই। এই পতাকার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমাদের জেগে থাকতে হবে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্য প্রতি মুহূর্তে। এবারের বিজয় দিবস রাজাকারের ফাসির আনন্দ নিয়ে প্রথম বিজয় দিবস। এবারের বিজয় দিবস মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিজয় দিবস। কারন সেই পরাজিত হায়েনাদের উপর প্রতিশোধ আমরা নিতে পেরেছি। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ বীরাঙ্গনা মায়ের অশ্রুর বদলা আমরা নিতে পেরেছি। সময় এখন নতুন আগামীর পথযাত্রার।
সব দেশের সেরা দেশ - বাংলাদেশ , বাংলাদেশ।
সব গানের সেরা গান -স্লোগান , স্লোগান।
জামাত শিবিরের রাজনীতি , আইন করে বন্ধ কর।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা , হারিয়ে যেতে দেব না।
একাত্তরের হাতিয়ার , গর্জে উঠুক আরেকবার।
আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালবাসি।
জয় ... বাংলা...।
একাত্তরে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর কেটে গেছে বিয়াল্লিশটি বছর। বর্তমান প্রজন্মের জন্য , আমাদের জন্য জীবনের শ্রেষ্ঠ বিজয় দিবস হল ২০১৩ সালের আজকের দিনটি ।২০১৩ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর -স্মৃতির পাতায় অক্ষয় হয়ে থাকবে কারন এবারের বিজয় দিবসের আগে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর অর্জন করেছে মুক্তিযুদ্ধের পর শ্রেষ্ঠ বিজয় - রাজাকার কসাই কাদেরের ফাসি। আর এবারের বিজয় দিবসেই তিন লাখ বাঙালি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেই ঐতিহাসিক বিজয়ের ক্ষন বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিটে সমবেত কণ্ঠে গেয়েছি আমাদের প্রানের জাতীয় সঙ্গীত , গড়েছি নতুন বিশ্ব রেকর্ড - অতিক্রম করেছি ভারতকে।
সকালে হেঁটে যাওয়ার কারনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছাতে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। যাওয়ার পর পরই কোথা থেকে একখানা আইডি কার্ড ম্যানেজ হয়ে গেল , Fariha তাহার গেঞ্জি আমাকে দিয়ে দিলেন আর এরপর আমি কাজ খুঁজতে থাকলাম কি করা যায়। ছেলে সহযোদ্ধাদের উপর মাঝে মাঝে আসলেই রাগ হয়। এনারা এক একজন সব কাজ করে করে জ্বর বানায় ফেলছেন , আর মেয়ে হওয়ার কারনে আমি ফ্যামিলির বাধা পার হয়ে আসতে আসতেই শেষ। আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মানুষের যে সমুদ্র ছিল তা সত্যি প্রমাণ করে বাঙালি জেগে আছে। বাঙালি জেগে থাকবে আজীবন। জেগে থাকবে পাঁচ লক্ষ মানুষের শপথ - "যারা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থন করবে , আমরা তাদের বর্জন করব।"
আমরা ভলান্টিয়াররা দাঁড়িয়ে আছি , বাঁশের বেড়া ভেঙ্গে মানুষ ঢুকে যাচ্ছে ভিতরে। এত মানুষ , বিভিন্ন প্রবেশপথে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু বাঙালি। ছোট শিশু থেকে শুরু করে অশীতিপর বৃদ্ধা মা সবার কণ্ঠে মুহুর্মুহু স্লোগান - জয় বাংলা। সামনে মঞ্চে কখনও চলছে কনসার্ট ফর ফ্রিডম , কখনও চলছে জাগরনের গান , কখনও চলছে স্লোগান। এইদিকে আমরা ভলান্টিয়াররা হিমশিম খাচ্ছি এই জনতার স্রোতকে শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখতে। বিকাল ৪ টা ১৫ মিনিটে দেখানো হল পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের উপর প্রামান্য অভিনয়। সেই দলিল সাক্ষর হয়ার সাথে সাথে সারা উদ্যান যেভাবে জয় বাংলা বলে চিৎকার করে উঠেছিল তাতে স্বাধীনতাবিরোধী যে কোন অপশক্তি কেঁপে উঠতে বাধ্য।
এরপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষন। বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিট। যে যেখানে আছি সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম। গাইলাম আমাদের প্রিয় জাতীয় সঙ্গীত , অদ্ভুত মায়াভরা সেই গান -"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।" এরপর শপথ গ্রহণ - শপথ পাঠ করালেন মহান মুক্তিযুদ্ধের উপ- অধিনায়ক বীর উত্তম এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খোন্দকার। সত্যি এই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া আর শপথ গ্রহণের সময় চোখের কোণে নিজের অজান্তে অশ্রু জমা হচ্ছিল আর মনে হচ্ছিল , আমরা পেরেছি। আমরা আর কখনও হারব না। বাংলাদেশকে আর কেউ কখনও হারাতে পারবে না। বাংলাদেশ রক্তের দামে স্বাধীন হয়েছে , বাংলাদেশ অশ্রুর দামে স্বাধীন হয়েছে , বাংলাদেশ আন্দোলনের দামে রাজাকার কসাইমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ জেগে আছে।
শপথ গ্রহনের পর পতাকা হস্তান্তর। একাত্তরের দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম শফিউল্লাহ এবং বীর উত্তম এ কে খোন্দকার পতাকা হস্তান্তর করলেন এই প্রজন্মের দুইজন বীরযোদ্ধা ইমরান ভাইয়া এবং বাধন ভাইয়ার কাছে। প্রতীকী অর্থে তাঁরা রক্তের দামে কেনা এই পতাকা হস্তান্তর করলেন ২০১৩ এর প্রজন্মের কাছেই। এই পতাকার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমাদের জেগে থাকতে হবে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্য প্রতি মুহূর্তে। এবারের বিজয় দিবস রাজাকারের ফাসির আনন্দ নিয়ে প্রথম বিজয় দিবস। এবারের বিজয় দিবস মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিজয় দিবস। কারন সেই পরাজিত হায়েনাদের উপর প্রতিশোধ আমরা নিতে পেরেছি। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ বীরাঙ্গনা মায়ের অশ্রুর বদলা আমরা নিতে পেরেছি। সময় এখন নতুন আগামীর পথযাত্রার।
সব দেশের সেরা দেশ - বাংলাদেশ , বাংলাদেশ।
সব গানের সেরা গান -স্লোগান , স্লোগান।
জামাত শিবিরের রাজনীতি , আইন করে বন্ধ কর।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা , হারিয়ে যেতে দেব না।
একাত্তরের হাতিয়ার , গর্জে উঠুক আরেকবার।
আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালবাসি।
জয় ... বাংলা...।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন