রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

আলোকের পথে শুভযাত্রা ...।

বিজয়ের মাসে একের পর এক বিজয় সংবাদ...।রাজাকার কাদের কসাই এর মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়ে গেছে ... জলপাই রঙ ট্রাকে করে লাল কাপড়ে মোড়ানো এই মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পাঠানো হয়েছে ...। লাল কাপড়ে মোড়া পরোয়ানা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে গেছেন ট্রাইব্যুনালের উপনিবন্ধক অরুণাভ চক্রবর্তী ।---তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের কাছেও অনুলিপি পাঠিয়েছেন। বাকি আনুষ্ঠানিকতা কারা কর্তৃপক্ষ করবে। এই সুখবর শোনার পর অন্তর থেকে আপনাআপনি বের হয়ে আসে বুকফাটা চিৎকার ... জয় বাংলা...।

নিয়ম অনুযায়ী,এখন কারা কর্তৃপক্ষ কাদের মোল্লার কাছে জানতে চাইবে সে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইবে কি না।ক্ষমা ভিক্ষা চাইলে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতাকে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যে আবেদন জানাতে হবে। তার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ। এখন শুধু ফাসির অপেক্ষা...। দশ মাসের আন্দলন এখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে ...শুধু ফাসির অপেক্ষা...। যে কোন দিন এখন কার্যকর হবে কাদের কসাইয়ের ফাসি...।

প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন আর বীরাঙ্গনা মা মোমেনা বেগমের সাক্ষ্যেই মূলত রচনা হচ্ছে বাংলা মায়ের বিয়াল্লিশ বছরের কলঙ্কমুক্তির এই পথ ...। দুই বছরের ছোট ভাইকে আছড়ে মারা, দুই বোনকে জবাই, এক বোনকে ধর্ষণ, মাকে গুলি করে মারা- এতগুলো দৃশ্য দেখে নিজে ধর্ষিত হওয়ার পর মোমেনা বেগমের স্বাভাবিক থাকাটাই হতো অস্বাভাবিক।একাত্তরে একদিনে এতগুলো ঘটনার পর পাগলই হয়েছিলেন এই নারী। তবে সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে হাজির হয়েছিলেন তিনি।

চোখের সামনে মা-ভাই-বোনদের মৃত্যু দেখলেও সেদিন ধরে নেয়ার পর বাবা হযরত আলী লস্করের কোনো খবর আর পাননি মোমেনা। তাই সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো কাদের মোল্লার প্রতি মোমেনার প্রশ্ন ছিল- “আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই- আমার বাবা কোথায়?” বীরাঙ্গনা মা মোমেনা বেগম হয়ত জানতে পারবেন না কখনই তাঁর বাবা কোথায় ... কিন্তু সেই খুনির ফাসি তো দেখতে পারবেন... এই ফাসিটাই হল ২০১৩ এর প্রজন্মের পক্ষ থেকে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা -বীরাঙ্গনাদের প্রতি উপহার ...।

জয় বাংলা ... জয় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর ...।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন