রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৪

শিরোনামহীন কিছু কথা...

তবু স্বপ্ন দেখি। কিছু ঘটনা এমনই, কোনো ভাবেই বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়না। মনে হয়, যদি পারতাম এইসব লজ্জাজনক ঘটনাগুলোকে মুছে ফেলতে! সত্যি খুব লজ্জা হয় যখন শুনি যে কেউ বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি নিয়ে বিতর্ক তোলে। যখন ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের দামে আর দুই লাখ মায়ের সম্ভ্রমের দামে স্বাধীন করা বাংলাদেশের কোন মন্ত্রী বলেন,ক্ষমা চাইলে জামাত নিষিদ্ধের প্রয়োজন নেই! খুব খারাপ লাগে তখন। নিজের মনকে সেই সময়ে প্রবোধ দ...েই এই বলে যে,আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষেরা এখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রেখেছি আর যতদিন বাঙ্গালিরা বেঁচে থাকবে, বাংলাদেশ কে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। কখনই না।

আমরা গণজাগরণ মঞ্চে দাবি তুলি, রাজাকারের ফাঁসি চাই। জামাত শিবির নিষিদ্ধ চাই। কিন্তু ক্ষমতার লোভ আর রাজনীতির জটিল সমীকরণ হয়ত বা রাজনীতিবিদ দের মানুষ থাকতে দেয়না। কত আন্দোলন করে, কত রক্তের দামে একজন কাদের কসাইয়ের ফাঁসি আদায় করতে হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। তারপরও আমরা তো পিছু হটি নি। নিজেদের দাবি থেকে এক পা সরি নি আমরা। শাহবাগের কর্মী দের উপর একের পর এক আক্রমণ হয়েছে জামাত শিবির দ্বারা, পাকিস্তান হাই কমিশনের সামনে পুলিশের নির্লজ্জ আক্রমণের কথাও আমরা ভুলিনি। এত কিছুর পরও শাহবাগ জেগে আছে, জেগে থাকবে।

গণমানুষের সচেতনতা ক্ষমতাবানদের জন্য সবসময়ই ভীতির বস্তু, শাহবাগ আন্দোলন করতে গিয়ে এ ব্যাপারটা স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছি। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য ইসলামী ব্যাংকের টাকা নেওয়া বন্ধ হয়েছিল কত লেখালেখি আর কত প্রতিবাদের পর তাও কারো অজানা নয়। হাজার হলেও, আমরা বাঙালি। সংগ্রাম আমাদের রক্তের সাথে মিশে আছে। আর তাই বাংলা মাকে কখনই রাজনীতির বলি হতে দেইনি আমরা, দেবোও না। রাজনীতিবিদরা যতই নির্লজ্জ মন্তব্য করুন না কেন, আমরা জানি আমাদের জাতির পিতার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান।

আমরা আপোষে বিশ্বাস করিনা, সংগ্রামে বিশ্বাস করি। গোলটেবিলে বিশ্বাস করি না, রাজপথে বিশ্বাস করি। তাই বাংলাদেশ, বাঙ্গালির উপর কোন আঘাত কখনই মুখ বুজে সহ্য করব না। আপোষনামা লিখব না। সব কয়টা রাজাকারের ফাসি না হওয়া পর্যন্ত, জামাত নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবেই। এখন এ লড়াইয়ে যার খুশি আমাদের সাথে থাকতে পারে, যার খুশি সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধাচরণ করে রাজনীতির লড়াইয়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথে হাত মেলাতে পারে। তবে একটা কথাই বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আর বিপক্ষের লড়াইয়ে নিরপেক্ষতার কোন স্থান নেই। গণজাগরণ মঞ্চ এই দুই পক্ষের মধ্যে সুস্পষ্ট বিভেদটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

আগামী ইতিহাসই নির্ধারণ করবে কাকে সে সম্মান দেবে আর কাকে আস্তাকুরে ছুঁড়ে ফেলবে। আমি শুধু জানি আমরা চোখের জলে ভেসে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে জানি। আমরা চরম হতাশার মাঝে আশার ফুল হয়ে জ্বলে উঠতে জানি। বাংলাদেশ, অনন্ত অক্ষত মূর্তিতে জেগে থাকা ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের নাম। বাঙালি যতদিন জেগে আছে, বাংলাদেশকে কেউ পরাস্ত করতে পারবে না। জয় বাংলা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন