মায়াবী পূর্ণিমার আলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হয়, আজ কিছু সময় প্রয়োজন একান্ত নিজের জন্য। কিছু সময় প্রয়োজন নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার জন্য। একবার নতুন করে শুরু করবার জন্য। বৃষ্টি দেখার জন্য, পূর্ণিমা দেখার জন্য আমার কিছু সময় চাই। ছোট কিছু আনন্দের জন্য, কিছু অবসরের জন্য, দুচোখ ভরে চারপাশটা দেখার জন্য কিছু সময়ের খুব প্রয়োজন আজ।ঘুরে বেড়াতে চাই অজানা অদেখা জায়গাগুলোতে। চাঁদের আলোয় একাকী বারান্দায় দাঁড়িয়ে ...থাকার জন্যও কিছু সময় চাই। সময় চাই নগর জীবনের ব্যস্ততা থেকে দূরে সরে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার জন্য। বুকের মাঝে একাত্তরকে, শাহবাগকে ধারণ করে বেঁচে থাকার জন্যই কিছুটা অবসরের আজ খুবই প্রয়োজন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত, বলতে গেলে শাহবাগ, রাজাকারের ফাঁসি এই বিষয়গুলোকে ছাড়া আর কিছুকে মনে তেমন একটা স্থান দেইনি। কলেজ থেকে সাসপেন্ড হলাম, ক্লাসের বান্ধবীরা সব একে একে দূরে সরে গেল, মাথায় এখনো সেলাইয়ের অসহ্য ব্যাথা যখন তখন জানান দিয়ে যায় প্রজন্ম চত্বরের কথা। এসব কিছুর বিনিময়ে প্রাপ্তি একটাই, বিয়াল্লিশ বছরের কলঙ্কমুক্তির প্রথম ধাপ, রাজাকার কাদের কসাইয়ের ফাঁসি। এই ফাঁসির জন্য আমার যতটুকু করার সাধ্য ছিল করেছি। যখন শাহবাগে যাওয়ার দরকার, শাহবাগে গিয়েছি। যখন লেখালেখি করার দরকার, করেছি। আর এসব কিছুর মধ্যে প্রজন্ম চত্বরকে ভালবেসে ফেলেছি নিজের চেয়েও অনেক বেশি।
জানি, পথচলা এখনও অনেকদূর বাকি। তারপরও, একটু বিরতি নেয়া খুব বেশি প্রয়োজন আজ। নিজেকে, পরিবারকে একটু সময় দেয়া, এইচ এস সি পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা করা, ভাল কোথাও ভর্তি হওয়া এসবের দিকে কিছুটা নজর দেয়ার সময় হয়ত এসে গেছে। তাই ভাবলাম, সবাই যেহেতু এখন ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত, আমিও এর মাঝে নিজেকে একটু বিশ্রাম দেই। আদালতে বসন্তকালীন ছুটি চলছে। এ সময় আমরা রাজাকারের ফাঁসি নিয়ে শত লিখলেও তেমন কোন লাভ হবে না। তাই, আরেকবার শুরু করার উপযুক্ত সময় আমার কাছে এটাই। সাময়িক বিরতি নিচ্ছি, তবে প্রজন্ম চত্বর থেকে দূরে সরছি না। পূর্ণিমা দেখলে যে প্রজন্ম চত্বরে যাওয়া যাবে না এমন কোন কথা লেখা নেই কোথাও।
শাহবাগ, তোমাকে ভালোবাসি। তাই ইতিহাসের দায় শোধ করতে বারবার ফিরে আসি তোমারই কাছে। মা জাহানারা ইমামের স্বপ্ন পূরণের পথটা যে প্রজন্ম চত্বরের সেই প্রিয় পথ। যে পথে পাঁচ লক্ষ বার পাঁচ লক্ষ ভাবে লেখা আছে প্রতিটা যোদ্ধার নাম। যে পথের ধূলিকণায় মিশে আছে শহীদের রক্তের ঘ্রাণ আর একাত্তরের হায়েনাদের প্রতি তীব্র ঘৃণার শপথ। যে পথে চলতে নিজের অজান্তেই মনের মাঝে বেজে ওঠে, "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।" শাহবাগ জেগে আছে, শাহবাগ ঘুমায় না। শাহবাগ জেগে থাকে, শাহবাগ ঘুমাবে না। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ বীরাঙ্গনা মায়ের রক্তের ঋণ আমরা কখনই শোধ করতে পারব না। কিন্তু তাঁদেরকে ন্যায়বিচারটা দেয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব। সবশেষে কবি হেলাল হাফিজের ভাষায় বলতে চাই-
মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার।
নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে।
বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে তাঁবুর ভেতরে
ঢুকে দেখেছি তোমাকে বারবার কতোবার।মনে আছে,
আমার জ্বালার বুক তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে
উঠে তুমি বিস্ফোরণে প্রকম্পিত করতে আকাশ, আমাদের
ভালবাসা/ মুহূর্তেই লুফে নিত অত্যাচারী শত্রুর নি:শ্বাস।
মনে পড়ে তোমার কঠিন নলে তন্দ্রাতুর কপালের মধ্যভাগ
রেখে, বুকে রেখে হাত কেটে গেছে আমাদের জঙ্গলের কতো
কালো রাত! মনে আছে, মনে রেখো/ আমাদের সেই সব
প্রেম-ইতিহাস। অথচ তোমাকে আজ সেই আমি কারাগারে
সমর্পণ করে, ফিরে যাচ্ছি ঘরে /মানুষকে ভালোবাসা
ভালোবাসি বলে।যদি কোনোদিন আসে আবার দুর্দিন,
যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে
ভেঙে সেই কালো কারাগার/ আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র
তোমার আমার । ( অস্ত্র সমর্পণ - হেলাল হাফিজ )
জয় বাংলা।জয় বঙ্গবন্ধু।জয় শহীদজননী।জয় মুক্তিযুদ্ধ। জয় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত, বলতে গেলে শাহবাগ, রাজাকারের ফাঁসি এই বিষয়গুলোকে ছাড়া আর কিছুকে মনে তেমন একটা স্থান দেইনি। কলেজ থেকে সাসপেন্ড হলাম, ক্লাসের বান্ধবীরা সব একে একে দূরে সরে গেল, মাথায় এখনো সেলাইয়ের অসহ্য ব্যাথা যখন তখন জানান দিয়ে যায় প্রজন্ম চত্বরের কথা। এসব কিছুর বিনিময়ে প্রাপ্তি একটাই, বিয়াল্লিশ বছরের কলঙ্কমুক্তির প্রথম ধাপ, রাজাকার কাদের কসাইয়ের ফাঁসি। এই ফাঁসির জন্য আমার যতটুকু করার সাধ্য ছিল করেছি। যখন শাহবাগে যাওয়ার দরকার, শাহবাগে গিয়েছি। যখন লেখালেখি করার দরকার, করেছি। আর এসব কিছুর মধ্যে প্রজন্ম চত্বরকে ভালবেসে ফেলেছি নিজের চেয়েও অনেক বেশি।
জানি, পথচলা এখনও অনেকদূর বাকি। তারপরও, একটু বিরতি নেয়া খুব বেশি প্রয়োজন আজ। নিজেকে, পরিবারকে একটু সময় দেয়া, এইচ এস সি পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা করা, ভাল কোথাও ভর্তি হওয়া এসবের দিকে কিছুটা নজর দেয়ার সময় হয়ত এসে গেছে। তাই ভাবলাম, সবাই যেহেতু এখন ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত, আমিও এর মাঝে নিজেকে একটু বিশ্রাম দেই। আদালতে বসন্তকালীন ছুটি চলছে। এ সময় আমরা রাজাকারের ফাঁসি নিয়ে শত লিখলেও তেমন কোন লাভ হবে না। তাই, আরেকবার শুরু করার উপযুক্ত সময় আমার কাছে এটাই। সাময়িক বিরতি নিচ্ছি, তবে প্রজন্ম চত্বর থেকে দূরে সরছি না। পূর্ণিমা দেখলে যে প্রজন্ম চত্বরে যাওয়া যাবে না এমন কোন কথা লেখা নেই কোথাও।
শাহবাগ, তোমাকে ভালোবাসি। তাই ইতিহাসের দায় শোধ করতে বারবার ফিরে আসি তোমারই কাছে। মা জাহানারা ইমামের স্বপ্ন পূরণের পথটা যে প্রজন্ম চত্বরের সেই প্রিয় পথ। যে পথে পাঁচ লক্ষ বার পাঁচ লক্ষ ভাবে লেখা আছে প্রতিটা যোদ্ধার নাম। যে পথের ধূলিকণায় মিশে আছে শহীদের রক্তের ঘ্রাণ আর একাত্তরের হায়েনাদের প্রতি তীব্র ঘৃণার শপথ। যে পথে চলতে নিজের অজান্তেই মনের মাঝে বেজে ওঠে, "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।" শাহবাগ জেগে আছে, শাহবাগ ঘুমায় না। শাহবাগ জেগে থাকে, শাহবাগ ঘুমাবে না। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ বীরাঙ্গনা মায়ের রক্তের ঋণ আমরা কখনই শোধ করতে পারব না। কিন্তু তাঁদেরকে ন্যায়বিচারটা দেয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব। সবশেষে কবি হেলাল হাফিজের ভাষায় বলতে চাই-
মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার।
নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে।
বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে তাঁবুর ভেতরে
ঢুকে দেখেছি তোমাকে বারবার কতোবার।মনে আছে,
আমার জ্বালার বুক তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে
উঠে তুমি বিস্ফোরণে প্রকম্পিত করতে আকাশ, আমাদের
ভালবাসা/ মুহূর্তেই লুফে নিত অত্যাচারী শত্রুর নি:শ্বাস।
মনে পড়ে তোমার কঠিন নলে তন্দ্রাতুর কপালের মধ্যভাগ
রেখে, বুকে রেখে হাত কেটে গেছে আমাদের জঙ্গলের কতো
কালো রাত! মনে আছে, মনে রেখো/ আমাদের সেই সব
প্রেম-ইতিহাস। অথচ তোমাকে আজ সেই আমি কারাগারে
সমর্পণ করে, ফিরে যাচ্ছি ঘরে /মানুষকে ভালোবাসা
ভালোবাসি বলে।যদি কোনোদিন আসে আবার দুর্দিন,
যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে
ভেঙে সেই কালো কারাগার/ আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র
তোমার আমার । ( অস্ত্র সমর্পণ - হেলাল হাফিজ )
জয় বাংলা।জয় বঙ্গবন্ধু।জয় শহীদজননী।জয় মুক্তিযুদ্ধ। জয় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন