রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৪

বিস্মৃতিবৃষ্টি

রজনীগন্ধার সৌরভে আর রাতের আকাশে হাজার তারার মেলায় আমি স্নিগ্ধতার প্রতিমূর্তি দেখতে পেয়েছিলাম। মাধবীলতা ফুলের চারপাশে অবিরাম উড়ে বেড়াতে দেখেছি  কালো ভ্রমরের দলকে। প্রকৃতির এ যে  এক অমোঘ নিয়ম, যোগ্যতমের জয় হোক। সারভাইভাল অফ দ্যা ফিটেস্ট। পৃথিবী নিজেই তো এক অক্লান্ত অবিরাম সংগ্রামের ভূমি। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে, সময়ের প্রয়োজনে ধূলি মাটির এ পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে কত লড়াই চিত্রিত হয়েছে, কেই বা লিখে রেখেছে সে সব না বলা কথা। অস্ফুট কিছু গোলাপের পাপড়ি হয়ত চিরকাল ধরে গেয়ে গেছে আদি অকৃত্রিম মানবপ্রেমের গান। আবদ্ধ শহরে মায়ের জন্মদিনে বনি প্রিন্সের আধ ফোঁটা কলি উপহার দিয়ে শহীদ রুমী বোঝাতে চেয়েছিলেন, এরকমই অনেক রক্ত ঝরিয়ে অবশেষে স্বাধীনতার রাজপুত্র আসবে।

আত্মমগ্ন কবি, তুমি নার্সিয়াস হতে যেও না। চারপাশে চেয়ে দেখ, আদি অকৃত্রিম প্রাণের প্রবাহ তোমাকে ঘিরে। প্রতিটা প্রাণের সাথে কত স্বপ্ন, কত আঘাত, কত হাসি কান্নার ইতিহাস মিশে আছে জানি না মহাকাল তার পাতায় লিখে রাখে কিনা সেসব অজানা স্মৃতি। মৃদুমন্দ দখিনা বাতাসের মাঝে ইট কাঠ পাথরের শহরে বসেও আমি কল্পনা করেছিলাম নক্ষত্রখচিত রাতে জ্যোৎস্নাস্নান করার দৃশ্য। তারাদেরকেও কি জীবন সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয়! হয়ত বা, কারণ ওরাও তো প্রকৃতির বাইরে নয়। ধুমকেতু আর দূরের নক্ষত্রের ছবি এঁকেছি নিজের মনে। উচ্চ মাত্রার দর্শন ক্ষমতা সম্পন্ন টেলিস্কোপ দিয়ে নক্ষত্র দেখার চেয়ে এভাবে দেখা অনেক বেশি আনন্দের। জীবনটা আরেকটু সহজ হলে কি ক্ষতি হত জানা নেই। তবু তো জীবন এগিয়ে যায়...

শিরোনামহীন কিছু কথা...

তবু স্বপ্ন দেখি। কিছু ঘটনা এমনই, কোনো ভাবেই বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়না। মনে হয়, যদি পারতাম এইসব লজ্জাজনক ঘটনাগুলোকে মুছে ফেলতে! সত্যি খুব লজ্জা হয় যখন শুনি যে কেউ বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি নিয়ে বিতর্ক তোলে। যখন ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের দামে আর দুই লাখ মায়ের সম্ভ্রমের দামে স্বাধীন করা বাংলাদেশের কোন মন্ত্রী বলেন,ক্ষমা চাইলে জামাত নিষিদ্ধের প্রয়োজন নেই! খুব খারাপ লাগে তখন। নিজের মনকে সেই সময়ে প্রবোধ দ...েই এই বলে যে,আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষেরা এখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রেখেছি আর যতদিন বাঙ্গালিরা বেঁচে থাকবে, বাংলাদেশ কে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। কখনই না।

আমরা গণজাগরণ মঞ্চে দাবি তুলি, রাজাকারের ফাঁসি চাই। জামাত শিবির নিষিদ্ধ চাই। কিন্তু ক্ষমতার লোভ আর রাজনীতির জটিল সমীকরণ হয়ত বা রাজনীতিবিদ দের মানুষ থাকতে দেয়না। কত আন্দোলন করে, কত রক্তের দামে একজন কাদের কসাইয়ের ফাঁসি আদায় করতে হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। তারপরও আমরা তো পিছু হটি নি। নিজেদের দাবি থেকে এক পা সরি নি আমরা। শাহবাগের কর্মী দের উপর একের পর এক আক্রমণ হয়েছে জামাত শিবির দ্বারা, পাকিস্তান হাই কমিশনের সামনে পুলিশের নির্লজ্জ আক্রমণের কথাও আমরা ভুলিনি। এত কিছুর পরও শাহবাগ জেগে আছে, জেগে থাকবে।

শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০১৪

আমার সোনার বাংলা,আ মি তোমায় ভালোবাসি।

শ্রাবন্তী মেঘের কারুকার্য ছেয়ে ফেলেছিল তোমার আকাশটিকে।আকাশজুড়ে জমা হয়েছিল ঘন কাল মেঘমালা। একসময় তারা ঝরে পরেছিল অঝোরে বৃষ্টি হয়ে।সেই বৃষ্টি, বিধাতার আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল কাঠফাটা রৌদ্রের পরে। এক নবযৌবন লাভ করেছিল তোমার প্রকৃতি।এ বৃষ্টিকে দেখে নতুন ফসলের আশায় বুক বেঁধেছিল কৃষাণ। কবি রচনা করেছিল নতুন কোনও কবিতা। কোথাও হয়ত একটি একাকী কিশোরী বালিকা লুকিয়ে লুকিয়ে ছাদে উঠে গিয়েছিল বৃষ্টিতে ভিজতে।অবাক হয়ে ...বিস্ময় ভরে তোমার সে রুপ দেখেছিলাম জানালার গরাদ ভেদ করে। আর নিজের মনেই বলেছিলাম, ভালবাসি।

অপরুপ রোদ্দুরে স্নান করা প্রকৃতি নিয়ে উজ্জ্বল হাসিতে উদ্ভাসিত ছিলে তুমি। কাকের চোখের মত কালোচুল এলিয়ে রাঙা উৎপলকে তোমার উপমা হিসেবে ব্যাবহার করে গেছেন কবি।কৃষ্ণচূড়ার লালে পুরো শরীর আবীর রাঙ্গা করে পৃথিবীর মানচিত্রে তুমি গৌরবের হাসি হাসছ। বসন্তের ছোঁয়া লেগেছিল তোমার প্রকৃতিতে। শীতের বৈরাগ্যের পর পরই বসন্তের পুস্পশোভিত ডালি নিয়ে সারা বিশ্বকে তুমি যেন জানিয়ে দিচ্ছ তোমার গৌরবময় উপাখ্যান। স্নেহময়ী তোমার সেই মাতৃরুপ আমি দেখেছি একান্ত অনুভবে। আর অন্তর থেকে উচ্চারন করেছি, ভালবাসি।

মুক্তির মন্দির সোপানতলে...

মুক্তির মন্দির সোপানতলে বীরদের নাম যেন অশ্রুজলেই লেখা থাকতে হয়। তাইত ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের মাঝেই মিশে আছে কত শত মায়ের বুক ফাটা কান্না আর বোনের অশ্রু সজল আর্তনাদ। অনেক জীবনের দামে পাওয়া এ দেশ, অনেক মূল্য দিয়ে পাওয়া। সত্যি, এ ব্যাপার গুলো ভাবতে বসলে নিজেই কখন কাঁদতে শুরু করি ভেবে পাইনা।

"মা, দেশের এই অবস্থায় তুমি যদি আমাকে জোর করে আমেরিকায় পাঠাও তাহলে আমি হয়ত যাব শেষ পর্যন্ত। কিন্তু আমার বিবেক ...চিরকালের মত অপরাধী করে রাখবে আমাকে। আমেরিকা থেকে বড় ডিগ্রি নিয়ে এসে হয়ত বড় ইঞ্জিনিয়ার হব, কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে কখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব না।তুমি কি তাই চাও, আম্মা?"

নাহ, আম্মা তা চাননি। আম্মা তা চাইতে পারেননা। আর তাই দেশের জন্য কুরবানি করে দিয়েছিলেন শহীদ রুমীকে। সেই উজ্জ্বল প্রতিভাবান সাহসী বীর মুক্তিসেনা শহীদ রুমীর জন্মদিন কাল। শহীদ রুমী আমাদের আদর্শ হয়ে বেঁচে থাকবেন চিরকাল।

শুভ জন্মদিন, শহীদ রুমী। আকাশের প্রথম শুকতারা হয়ে আশীর্বাদ করো আমাদের। শহীদ রুমী হয়ত জানেন তাঁর খুনি মুজাহিদ রাজাকারের ফাঁসির রায়ের কথা। কাদের কসাইয়ের ফাঁসির কথা। রুমীরা যে বারবার ফিরে আসেন বাংলায়। ইতিহাস হয়ে, ইতিহাসের নির্মাতা হয়ে, ইতিহাসের যোদ্ধা হয়ে...

জয় বাংলা...

সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি...

রজনীর নিকষ কালো আঁধার ভেদ করেও তো এক সময় আলোকমালার একটি সূক্ষ্ম কিরণ দেখা দেয় পূর্ব দিগন্তে। সেই রেখাটি ধীরে ধীরে বিস্তৃত হতে থাকে, আকার নেয় উজ্জ্বল এক আলোকের গোলকের যার নাম সূর্য। রক্তলাল আভা এক সময় ছড়িয়ে পরতে থাকে পুরোটা আকাশ জুড়ে। প্রকৃতিতে লাগে আলোর দোলা। হয়ত বা নতুন সূর্যের সাথে নতুন কোন এক স্বপ্নে বুক বাধে আশাহত ভাগ্যপরাহত কোনো এক মানুষ।হয়তবা ফসলের মাঠের পথ ধরতে লাঙল জোয়াল কাঁধে গ্রামীণ কৃষক...ের মনেও তখন নতুন জীবনের স্বপ্ন জাগে।

বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০১৪

স্মৃতির পাতা ও কিছু স্বপ্ন।

একটা সময় ছিল...

অনেক ছোট ছিলাম তখন। মায়ের হাত ধরে স্কুলে যেতাম। ক্লাসে বসে মাকে না দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি করতাম। জেদ করতাম মাকে ক্লাসের ভেতরে বসিয়ে রাখার জন্য। একটা নাম্বারের জন্য প্রথম না হতে পারলে আর কিছু ভাল লাগত না।ছবি আঁকতাম, সেখানেও প্রতিযোগিতা। সবচেয়ে বড় কথা, সে সময় প্রতিযোগিতাকে উপভোগ করতাম। অনেক ছোট ছিলাম, কিন্তু অনেক বড় বড় পাগলামি করতাম। স্কুলে একদিন না গেলে অসহ্য লাগত তখন।স্কুলের মাঠ, ...অযথা দৌড়াদৌড়ি, ক্লাস সবই অনেক ভাল লাগত তখন।

সেই ছোটবেলার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে একদিন চলে আসলাম ভিকারুন্নিসায়। বড় স্কুল, ভাল স্কুল, টিচাররাও অন্যরকম। কেমন যেন অন্য সবার থেকে দূরে সরে যেতে থাকলাম ধীরে ধীরে। ছোট ছোট ব্যাপারকে তখন উপেক্ষা করতাম। সবকিছুকে অতিক্রম করে নিজের লক্ষ্যে অটল থাকার স্বভাব ছিল তখন থেকেই। একসময় স্কুল লাইফের শেষে দাঁড়িয়ে দেখলাম, ফেয়ারওয়েল এর দিনটা তে আমার পাশে একটু দাঁড়ানোর মত কেউ নেই।

বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০১৪

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে প্রজন্ম চত্বর।

প্রজন্ম চত্বর, শাহবাগ। অদ্ভুত এক ভালবাসায় বেঁধে রেখেছে আমাকে। শাহবাগে গেলে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। আমি আমার আমিকে খুঁজে পাই। এখানে আমি বুঝতে পারি আমার সাধ্য কত টুকু এবং কি করতে পারি। শাহবাগ, আমাকে স্বপ্ন দেখতে শেখায়।সে স্বপ্নের বাস্তবায়নের জন্য লড়ে যেতে শেখায়। স্বাধীনতা দিবসে শাহবাগে যাব না, তাও কি হয়!!! তাই রওনা হয়ে গেলাম শাহবাগের পথে। এই পথ, এই জাদুঘর, পাবলিক লাইব্রেরি সব যেন আমার কত জনমের আপন। কত... যুগ যুগান্তরের আত্মার সম্পর্ক যেন রচিত হয়ে আছে এই প্রজন্ম চত্বরের সাথে। যত বার শাহবাগের মাটিতে পা রাখি, এই কথাগুলোই ঘুরে ফিরে মনে আসতে থাকে যে আমরা পেরেছি, আমরা পারব।

মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের শাহবাগ ছিল লাল - সবুজে রাঙ্গা এক অক্ষয় উপমা। যখন গিয়ে পৌছালাম, অনুষ্ঠান তখনও শুরু হয়নি। মাইকে বাজছে দেশের গান। ফুল ভলিউমে "তীরহারা এ ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে' বাজছিল তখন। চারপাশে ঘোরাফেরা করলাম কিছুক্ষণ। Imran ভাইয়ার সাথে কথা হওয়াটা আজকের সবচেয়ে স্মরণীয় দিক আমার। ভাইয়া নিজেও হয়ত জানেন না ঐ দুই মিনিটের কথা বলাটাই আমার কাছে কতটা আপন করে রাখার স্মৃতি। কতোটা আনন্দের স্মৃতি। Fida ভাইয়া, Jebtik ভাইয়াদের সাথেও আজকেই প্রথম কথা হল। আর এইসব আলাপ পরিচয়ের সময় মঞ্চে চলছিল রাজপথ সংলাপ। বিষয়ঃ যুদ্ধাপরাধের বিচার ও গণজাগরণ মঞ্চের ছয় দফাঃ আমরা এখন কোথায়?

সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০১৪

একটি পতাকা মিছিল ও ভালবাসার জয় বাংলা...

একটি পতাকা মিছিল ও ভালোবাসার "জয় বাংলা"...

স্বাধীনতা দিবস আজ। ২৬ মার্চ। সালটা ২০১৪। বেণীতে বেলি ফুলের মালাটা জড়াতে গিয়ে নিজের অজান্তেই হাসছিল দোলা।মহান স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস এই দিনগুলো এগিয়ে এলে হটাত করেই কেমন যেন মন ভাল হয়ে যায় তার। ঘন সবুজ জমিন আর লাল পাড়ের শাড়িটা অনেক যত্ন করে পরেছে দোলা আজকে।কপালে বেঁধেছে স্বাধীন বাংলার পতাকা।কি ভাববে পাগলটা এই সাজ দেখলে! সাগর কি বুঝবে এই সাজের মর্মার্থ!নাকি বরাবরের মত আজকেও গল্প করতে করতে কোন অজানায় হারিয়ে যাবে! এসব ভাবতে ভাবতেই চোখে কাজল লাগায় দোলা। চুড়ির সংগ্রহ থেকে লাল- সবুজ চুড়ির গোছাটা বের করে। আজকে সব কিছুই যেন বেশি সুন্দর লাগছে। তৈরি হয়ে ঘর থেকে বাইরে পা বাড়ায় দোলা।

সাগরের বাসা গুলশানে। দোলাকে অনেক ভালোবাসে সে। মাঝে মাঝে তার মনে হয়, মেয়েটা যেন একটু বেশি পাগল। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে কি এক শাহবাগ নিয়ে পরে আছে, আজ পর্যন্ত বিরাম নেই। ফেসবুকে আগে ওর প্রতিটা স্ট্যাটাসে কত আনন্দ করত দুইজনে মিলে। আর এখন ? দোলার স্ট্যাটাসের মর্মার্থ সাগরের মাথার দুই মাইল উপর দিয়ে যায়। এই শান্ত শিষ্ট মেয়েটার মধ্যে এত তেজ কোথা থেকে আসল সাগর তা ভেবে পায়না। হয়ত শাহবাগ থেকেই। দোলা তো তাই বলে। নিজে সে "আই হেইট পলিটিক্স" ধরণের ছেলে। কিন্তু দোলার কাজে কখনও বাঁধা হয়ে দাড়ায়নি। পাগলিটা আজকে জানি আবার কি আবদার করে বসে! মনে মনে এই ভাবতে ভাবতে বাড়ি থেকে বের হয় সাগর।

শনিবার, ২২ মার্চ, ২০১৪

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি

জাতীয় সঙ্গীত আমাদের বাংলাদেশের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। এটা এমন একটা আবেগ যা কোন শব্দ দিয়ে কক্ষনো বোঝানো সম্ভব না। গত বছরের মহান বিজয় দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কিংবা গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে লাখ লাখ কণ্ঠে একই সাথে আমার সোনার বাংলা গাওয়ার যে অনুভূতি, তা যে অনুভব না করেছে তাকে বোঝানো সম্ভব নয়। জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিশ্বরেকর্ড হোক বা না হোক, আমি শুধু জানি যে বিজয় ২০১৩ অনুষ্ঠানে ...এ জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গিয়ে আমার চোখে পানি এসেছিল, ইচ্ছা করছিল পতাকাটা আঁকড়ে ধরে অঝোরে কাঁদি। বড় মধুর সেসব স্মৃতি আমার, বড় ভালোবাসার এই বাংলাদেশ, এ ইতিহাস, প্রজন্ম চত্বর আর অমর এই জাতীয় সঙ্গীত।

বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরবার সময় বিমানে পরম ভালবাসা নিয়ে গাইছিলেন এ গানটি। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।" একাত্তরে এই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার "অপরাধে" কত বাঙ্গালিকে যে গুলিতে, বেয়নেটে ঝাঁঝরা করেছে তার কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। কারণ, লক্ষ লক্ষ মিসাইলের চেয়েও এ জাতীয় সঙ্গীত অনেক বেশি শক্তিশালী। জাতীয় সঙ্গীত, বাংলাদেশকে ভালোবাসার উচ্চকিত ঘোষণা। অনেক জীবনের দামে পাওয়া এ অমূল্য সম্পদ। প্রতিটা লাইনে মিশে আছে শহীদের রক্তের ঘ্রাণ, বীরাঙ্গনা মায়ের অশ্রু। ভালোবাসি, অনেক বেশি ভালবাসি এ জাতীয় সঙ্গীতকে। আর তাই সহ্য করতে পারিনা জাতীয় সঙ্গীতের কোনরকম অপমান।

বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০১৪

মারণাস্ত্র, মনে রেখ ভালোবাসা তোমার আমার...

মায়াবী পূর্ণিমার আলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হয়, আজ কিছু সময় প্রয়োজন একান্ত নিজের জন্য। কিছু সময় প্রয়োজন নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার জন্য। একবার নতুন করে শুরু করবার জন্য। বৃষ্টি দেখার জন্য, পূর্ণিমা দেখার জন্য আমার কিছু সময় চাই। ছোট কিছু আনন্দের জন্য, কিছু অবসরের জন্য, দুচোখ ভরে চারপাশটা দেখার জন্য কিছু সময়ের খুব প্রয়োজন আজ।ঘুরে বেড়াতে চাই অজানা অদেখা জায়গাগুলোতে। চাঁদের আলোয় একাকী বারান্দায় দাঁড়িয়ে ...থাকার জন্যও কিছু সময় চাই। সময় চাই নগর জীবনের ব্যস্ততা থেকে দূরে সরে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার জন্য। বুকের মাঝে একাত্তরকে, শাহবাগকে ধারণ করে বেঁচে থাকার জন্যই কিছুটা অবসরের আজ খুবই প্রয়োজন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত, বলতে গেলে শাহবাগ, রাজাকারের ফাঁসি এই বিষয়গুলোকে ছাড়া আর কিছুকে মনে তেমন একটা স্থান দেইনি। কলেজ থেকে সাসপেন্ড হলাম, ক্লাসের বান্ধবীরা সব একে একে দূরে সরে গেল, মাথায় এখনো সেলাইয়ের অসহ্য ব্যাথা যখন তখন জানান দিয়ে যায় প্রজন্ম চত্বরের কথা। এসব কিছুর বিনিময়ে প্রাপ্তি একটাই, বিয়াল্লিশ বছরের কলঙ্কমুক্তির প্রথম ধাপ, রাজাকার কাদের কসাইয়ের ফাঁসি। এই ফাঁসির জন্য আমার যতটুকু করার সাধ্য ছিল করেছি। যখন শাহবাগে যাওয়ার দরকার, শাহবাগে গিয়েছি। যখন লেখালেখি করার দরকার, করেছি। আর এসব কিছুর মধ্যে প্রজন্ম চত্বরকে ভালবেসে ফেলেছি নিজের চেয়েও অনেক বেশি।

মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০১৪

আমরা করব জয় একদিন...

"স্বাধীনতা" অনেক প্রিয় কিছু শব্দের মধ্যে অন্যতম একটি। স্বাধীনতা, একটি জাতির জন্মের ইতিহাস। স্বাধীনতা, একটি দেশের জন্মের স্মারক।স্বাধীনতা সেই জীয়নকাঠির নাম যার স্পর্শে নিদ্রামগ্ন জাতির অন্তরে জাগে ঘুমভাঙ্গার অবিনাশী গান। শান্ত নিরীহ একটি জাতি হয়ে উঠতে পারে প্রতিবাদী সংগ্রামী। শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলেমেয়েরা কোমল হাতে তুলে নিতে পারে অস্ত্র।যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরার অমোঘ আহ্বান কোটি কোটি প্রাণকে এক সুতায় গেঁথে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে স্বাধীনতার ...লক্ষ্যে। স্বাধীনতা, ঘুমভাঙ্গা জাতির সুতীব্র চিৎকারের নাম। বোনের হাতে বজ্রমুষ্টির স্লোগানের নাম।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অনেক জীবনের দামে পাওয়া, কারো দানে পাওয়া নয়। আমি একাত্তর দেখিনি, জন্মাইনি তখনও। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সেই অমোঘ ঘোষণা আমাকে চোখের জল মুছে জয় বাংলা বলে চিৎকার করার সাহস যোগায়। আমি একাত্তর দেখিনি, কিন্তু শহীদ রুমী, বদি, আজাদ, আলতাফ মাহমুদ, জুয়েল দেরকে অনেক শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি। প্রতিটা মানুষের জীবনের একটা আদর্শ থাকে। শহীদ রুমীকে আমি আমার আদর্শ বলে মানি। লাল- সবুজকে ভালবাসি। ভালবাসি রক্তের দামে অর্জিত এ পতাকাকে। একুশে ফেব্রুয়ারি, ২৬ শে মার্চ, ১৬ ই ডিসেম্বরে আমিও যাই শহীদ মিনারে, স্মৃতিসৌধে একগুচ্ছ ফুল নিয়ে। আমি বাংলাদেশকে ভালবাসি।

কিংবদন্তির কথা বলছি...

বাংলাদেশ এমনই একটা দেশ, যেখানের অনেক সাধারণ একজন মানুষও হয়ে উঠতে পারেন অসাধারণ। বিশ্বের আনাচে- কানাচে ছড়িয়ে দিতে পারেন বাংলাদেশের নাম। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ যে পিছিয়ে নেই তার প্রমাণ বাংলাদেশের হিমালয় জয়, সম্প্রতি নিজস্ব ড্রোন আবিস্কার আরও কত কি। এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের বিজয় ইতিহাসে হয়ত যোগ হতে চলেছে আরেকটি বিজয়। লাল গ্রহ মঙ্গলের প্রথম পদার্পণকারীদের একজন হওয়া...র পথে রয়েছেন বাংলাদেশের নারী লুলু ফেরদৌস।

জিডি পাইলট হবার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু, ২০০০ সালে বাংলাদেশে নারী হওয়ার অপরাধে পূরণ করতে পারেননি স্বপ্নটা। কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি তিনি। ভিকারুন্নেসা স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। এগারো বছর চাকরি করে অর্থ জমিয়েছেন বিদেশে যাওয়ার জন্য। অবশেষে পাড়ি জমিয়েছেন আমেরিকায়। এরোস্পেস সায়েন্সে অর্জন করেছেন ডক্টরেট ডিগ্রি। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একটি সম্মানজনক পদে চাকরি করছেন তিনি।

বুধবার, ১২ মার্চ, ২০১৪

ভালবাসি বাংলাদেশ...

প্রাচীন রাজকুমারীর বেশে যদি একবার নিজেকে আবিস্কার করতে পারতাম!!! চারপাশটা যদি হটাত করে একদম নীরব হয়ে যেত! শুধু নিশ্ছিদ্র নীরবতা থাকত আমাকে ঘিরে। কাজের চাপ, দায়িত্ববোধ, পরীক্ষার টেনশন, প্রতিটা ব্যস্ততা, নানামুখী নানা মতের প্রতিটা তর্ক- বিতর্ক সব যদি কিছু সময়ের জন্য একটু বন্ধ করা যেত। নিজের আদর্শের জন্য যদি আর প্রতি মুহূর্তে যুদ্ধ করতে না হত! লড়াই করেই বাঁচতে চাই, তবে কিছুক্ষণের জন্য সবকিছু একেবারে... স্তব্ধ হয়ে যদি অসীম শূন্যতার মাঝে হারিয়ে যেতে পারতাম আর চারপাশে শুধু ভেসে আসত সঙ্গীতের মৃদু মধুর স্বর! ফুলের বাগানে ঘুমাতাম, প্রজাপতির পিছনে দৌড়ে বেড়াতাম আর এক মুঠো রোদ ধরার আনন্দ অনুভব করতাম! স্বপ্ন দেখতে যে আজো ভালবাসি... 
নগরজীবনের ব্যস্ততা থেকে অনেক দূরে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে কিছুদিনের জন্য। কিন্তু নিজে খুব ভালভাবেই জানি যে পুরো পৃথিবী ঘুরে আসার সুযোগ পেলেও এর পরিবর্তে একবার শাহবাগে যাওয়ার অনুমতিকেই আমি বড় করে দেখব। হ্যা, আমি শাহবাগকে অন্ধভাবেই ভালবাসি। বাংলাদেশকে অন্ধভাবেই ভালবাসি। আর এভাবেই ভালবাসতে চাই। কাদের মোল্লার ফাঁসির জন্য শাহবাগে গিয়েছি। কাদের মোল্লার ফাঁসি আদায় করে ছেড়েছি। একইভাবে একদিন কলঙ্কমুক্ত হবে বাংলাদেশ সব রাজাকারের কবল থেকেই। আর যতদিন তা না হবে ততদিন একাকী হলেও চিৎকার করে যাব "রাজাকারের ফাসি চাই" বলে।

রবিবার, ৯ মার্চ, ২০১৪

তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে...

ভালবাসি, অনেক ভালোবাসি মা তোমাকে। কখনও মুখ ফুটে বলা হয়নি ভালবাসি। কিন্তু তুমি তো মা, তুমি তো জানো আমি তোমাকে কত ভালবাসি। যেকোন কাজ করার আগে ভাবি, এই কাজে সফল হলে আম্মু কতটা খুশি হবে। এরপরই কাজটা করার অন্যরকম একটা শক্তি চলে আসে নিজের মাঝে। মা, তোমার মুখের এক একটা হাসি যে আমার কতোটা প্রিয় তা হয়তবা কখনই বোঝাতে পারব না। কিন্তু, আমার মনে হয় মায়ের সাথে মেয়ের সম্পর্কটাই এমন যে না বলেও অনেক কিছু বলা হয়ে য...ায়। জন্মের পূর্ব থেকেই যে মায়ের সাথে রচিত হয়ে আছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ভালবাসার বন্ধন।

বুঝতে শুরু করেছি যখন তারও আগে থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটা মুহূর্তে প্রতি পদক্ষেপে পাশে পেয়েছি তোমাকে। দুনিয়ার সবাই যখন দূরে সরে গেছে, তখনও মা তুমিই আমাকে বাঁচার সাহস দিয়েছ। তোমার অনুপ্রেরণা পেয়ে আর জাতীয় পতাকাটা বুকে নিয়েই তো বারবার বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছি, আশায় বুক বেঁধেছি। ভুল বন্ধুত্ব, ভুল ভালবাসা সবকিছু যখন বারবার আঘাত করে ক্ষত- বিক্ষত করেছে আমাকে, ছায়া হয়ে তুমিই পাশে দাঁড়িয়েছ আমার। শাহবাগে যেতে বাধা দাওনি কোনদিন, বাঁধা দাওনি আমার কোন ইচ্ছার পথে কখনও। তোমাকে অনেক ভালোবাসি মা...

কত ভুলই না করি প্রতিদিন। রাগের মাথায় কত কিছুই না করে বসি, কত খারাপ ব্যবহার করে ফেলি তোমার সাথে কতবার। কিন্তু, তুমি বারবার আমাকে সময় দাও, সাহস দাও নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে আবার নতুন করে শুরু করার জন্য। মা, তোমার জন্য আর প্রজন্ম চত্বরের জন্যই আমি বেঁচে আছি এখনও। নাহলে হয়ত বেঁচে থাকার অর্থ কবেই হারিয়ে ফেলতাম। মা, আরেকবার নতুন করে শুরু করছি সবকিছু। যেখানে শুধু থাকব আমি, তুমি, আমাদের ছোট্ট পবিত্র আর প্রজন্ম চত্বর। সবার উপরে আমাদের সাথে থাকবে বাংলাদেশ। মা, তুমি কি জানো তুমি দুনিয়ার সবচেয়ে ভাল, সবচেয়ে লক্ষ্মী মা।

জানো না, তাইত? ঠিক আছে, আজকেই জানাব তোমাকে। উপরের কথাগুলো চিঠিতে লিখে খামে ভরে তোমার কাপড়ের ড্রয়ারে রেখে দিয়েছি। আজকে সারাদিন তোমাকে চোখে চোখে রাখব। যেই তুমি চিঠিটা পড়বে, সাথে সাথে গিয়ে তোমাকে জড়িয়ে ধরব। তারপর? নাহ, তারপরের কথা আর ফেসবুকে শেয়ার করব না। সে মুহূর্তগুলো শুধু তোমার, আমার আর ঐ লাল- সবুজের। মাতৃস্নেহে যে আজো আগলে রেখেছে প্রতিটা সন্তানকে। কি রোদে, কি বৃষ্টিতে আর কি ঝড়- ঝঞ্ঝায়; চিরকালই আগলে রাখবে এমনি করে...

জয় বাংলা..

শনিবার, ৮ মার্চ, ২০১৪

আমার বাংলাদেশ, আঁধার পথে চলতে দেব না...

স্বপ্নজয়ী তুমি। তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ। রক্তগঙ্গায় স্নান করে অগ্নিঝরা এই মার্চেই তোমার জন্মদিন। একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাত্রি তোমাকে বিভীষিকায় আচ্ছন্ন করেছিল, কিন্তু তা শুধুই কিছু মুহূর্তের জন্য। অচিরেই তোমার সন্তানেরা প্রতি নগরে- বন্দরে- গ্রামে সবখানে গড়ে তুলেছিল প্রতিরোধ। পুতুল খেলার হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল বোন, বই খাতা ফেলে মুক্তিযুদ্ধে ছুটে গিয়েছিল কিশোর। নিশ্চিত জীবনের স্বপ্নকে নির্দ্বিধা...য় নিজের হাতে ভেঙ্গে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল শহীদ রুমী- আজাদেরা। আরও কত অজানা ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধ নামক অমর স্মারকের পেছনে লুকিয়ে আছে, আজও হয়ত তার সব আমরা জানিনা।

আর এসব কিছুর ফলশ্রুতিতে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ১৬ ডিসেম্বরে বিজয় লাভ করেছিল লাল- সবুজের এ অমর পতাকা। আমার সোনার বাংলা, তোমাকে অনেক ভালবাসি। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে, দুই লক্ষ বীরাঙ্গনা মায়ের আত্মদানের বিনিময়ে তুমি স্বাধীন হয়েছ। তোমার সন্তানেরা চিরকাল জেগে থাকবে তোমাকে রক্ষা করতে। তোমাকে রাজাকারমুক্ত করে, খুনি হায়েনাদের কবল থেকে তোমাকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে তবেই থামব কথা দিলাম মা। কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়েছে মা। অন্য সবারও হবে। এই বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের যে ঘুম নেই, শান্তি নেই। লড়াইকে কখনও শেষ না করে ছাড়তে নেই বলেই আমি বিশ্বাস করি।

কাজেই যে করেই হোক, এ লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদেরই। যে শপথ শাহবাগ আমাদের প্রাণে পৌঁছে দিয়েছে, কণ্ঠে তুলে দিয়েছে তাকে আমরা ভুলিনি, ভুলব না। কালরাত্রির আঁধার দূর করে নতুন সূর্যোদয় তোমার বুকে হয়েছে মা। আম্মার স্বপ্ন সফলের পথেই হাঁটছি আমরা। এখন শুধুই লক্ষ্যে অবিচল থাকার সময়, সবকিছুর আগে বাংলাদেশকে রাজাকারমুক্ত করতে হবে এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার সময়। এই বাংলাদেশ আমাদের, এই দেশকে যে ভালবাসে এই দেশ তার। এই দেশ বাঙ্গালির, এই দেশ চাকমা - মারমা- বাঙ্গালির। এ দেশ বঙ্গবন্ধুর, মুক্তিযোদ্ধাদের, আম্মা জাহানারা ইমামের, শহীদের, বীরাঙ্গনাদের আর দেশপ্রেমী বাঙ্গালির। এ দেশ লাল- সবুজের। কোন স্বাধীনতাবিরোধীর "না"।

আমার বাংলাদেশ, আঁধার পথে চলতে দেব না,
আমার বাংলাদেশ, বিভাজনে জ্বলতে দেব না।
জয় বাংলা...

বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০১৪

আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে ...

প্রিয় শাহবাগ,

বৈশাখ সন্ধ্যার ঝড়ো বর্ষণের মত করে বিস্মৃতিবৃষ্টিগুলোকে নিঃশেষ করার ইচ্ছা নিয়ে তোমার কাছে লিখছি। জানো, আজও তোমার নাম উচ্চারণের সাথে সাথে আমার চোখে ভেসে আসে গত বছরের ফেব্রুয়ারির সেই উত্তাল দিনগুলোর ছবি। কোথায় জাদুঘর, কোথায় বা টি এস সি আর কোথায় কাঁটাবন কোন সীমানা ছিল না যেন। সকল সীমার ঊর্ধ্বে উঠে পুরো জায়গাটির নাম হয়েছিল শাহবাগ। নবজাগরনের জোয়ার জাগানো শাহবাগ। দিনরাত স্লোগান আর অবস্থান...ের শাহবাগ।বাংলাদেশের মাটির স্পর্শে ধন্য হয়ে "জয় বাংলা" বলে চিৎকার করার শাহবাগ। জানো, তোমার বুকে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমার মনে খোদাই করা আছে।

তোমার বুকে এসে পৌঁছালে একদম অপরিচিত মানুষও হয়ে যায় আত্মার আত্মীয়। সেই এক বছর আগের কথা এগুলো। আজো তোমার বুকে মিছিল হয় রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে। আজো তোমার বুকে জেগে আছে গণজাগরণ মঞ্চ। তোমার কাছে যতবার আসি, মনে হয় এই জাদুঘর, মামুলি ফুলের দোকান -এগুলোর সাথে কত যুগ যুগান্তরের যেন আত্মীয়তার বাঁধন রচিত হয়ে গেছে। শাহবাগ, তোমার প্রতিটি ধূলিকণায় শহীদের রক্তের ঘ্রাণ মিশে আছে। তুমি যে বাংলাদেশের হৃদয়; আর বাংলাদেশের হৃদয়কে চিরকাল বাংলাদেশের সন্তানেরা রক্তের দামেই রক্ষা করেছে, করবে। তোমার বুকে আজো ওঠে স্লোগানের ঝড়, দৃপ্তকণ্ঠের শপথ।