বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৪

একটি বাংলাদেশ , তুমি জাগ্রত জনতার...

  • বাংলাদেশ আমাদের সবার , বাংলাদেশ প্রত্যেকটা বাঙালির প্রাণপ্রিয় জন্মভূমি। আর তাই যুগে যুগে একতাবদ্ধ হয়ে সবরকম অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে বাঙালি। আজ সময় এসেছে আবার রুখে দাঁড়ানোর , সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের , হানাহানির বিরুদ্ধে। রক্তের দামে বোনের সিঁথির সিঁদুর রক্ষা করার শপথ নেয়ার মাহেন্দ্রক্ষন আজ। প্রিয় , ফুল খেলবার দিন নয় আজ , ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা। ধ্বংসের মুখোমুখি আমাদের হাজার বছরের ইতিহাস , ঐতিহ্য , ভ্রাতৃত্ববোধ , সম্প্রীতি। ধ্বংসের মুখোমুখি মানবতা , ধ্বংসের মুখোমুখি পারস্পারিক সকল সুসম্পর্ক , শুভকামনা আর হাসি - খেলার ইতিহাসের পাতা। রাম রহিমের দেশে আজ ছড়ানো হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প। নির্বাচন , গণতন্ত্র , রাজনীতি , ক্ষমতার লড়াই - এসব থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশের নিভৃত পল্লীতে যে সজলা মাসী আর রহিমা বুবু একসাথে বসে নকশী কাঁথা বুনেছে আজীবন ধরে , সেই সরলা মাসীর ঘরে আজ আগুন দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। সজলা মাসীর অপরাধ , সে হিন্দু। সজলা মাসীর অপরাধ , সে ভোট দিতে গিয়েছিল। হ্যা , ভোট দিতে রহিমা বুবুও গিয়েছিল - কিন্তু ঐযে , সজলা মাসী হিন্দু ধর্মাবলম্বী। সমাজ তার গায়ে লাগিয়ে রেখেছে "সংখ্যালঘু" নামের এর ঘৃণ্য পরিচয়। সমাজ তাকে "আশ্রিত" বলে অভিহিত করতে স্বস্তিবোধ করে , মানুষ বলে নয়। রহিমা বুবু হয়ত কাঁদেন সজলা মাসীকে জড়িয়ে ধরে , পাশে থাকতে চান মাসীর। কিন্তু সজলা মাসীরা যে আর পারছেন না। পূর্বপুরুষদের রক্তের দামে , জীবনের দামে স্বাধীন করা বাংলাদেশে ঘাতক জামাত -শিবির আজও তাদেরকে চিহ্নিত করে আক্রমণ করে , সেই একাত্তরের মতই। একাত্তরে হয়ত সজলা মাসীর বাবা গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে , মা ছোট ছোট দুটি সন্তান নিয়ে অবরুদ্ধ বাংলাদেশ আর পার্শ্ববর্তী ভারতে ছুটে বেড়িয়েছেন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। আজকে বাংলাদেশ তো স্বাধীন , কিন্তু সজলা মাসীদের কেন থাকতে হবে নিজ দেশে পরবাসী হয়ে ?
  • প্রত্যেকবার নির্বাচনের পর - ফলাফল যাই হোক না কেন , ঘর -বাড়ি ছাড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে তাদেরই। আর প্রশাসন ? তার কথা আর নাই বা বলি। এক দল আরেকদলকে দোষারোপের মহান এবং অতীব গুরত্বপূর্ণ গনতন্ত্রের খেলার মাঝে কোথায় হারিয়ে যাবে সজলা মাসির সিঁথির সিঁদুর , এসবের হিসাব রাখার সময় কোথায় স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রকদের ? দামি দামি গাড়ি - বাড়ি ; সে তো শুধু অনেক দূরে বসে টেলিভিশনের মাধ্যমে নির্দেশনা দেয়ার জন্য - "নাগরিক কমিটি গড়ে তোল" বলে। প্রশিক্ষিত একটা সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে নিরীহ গ্রাম্যবধু সজলা মাসীদের কোনরকম সাহায্য না দিয়ে যদি বলা হয়- "প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোল" তাহলে এর চেয়ে নির্মম কৌতুক আর কি হতে পারে ? কতটা আঘাত পেলে একজন মানুষ বলতে পারেন- "আমাদের তোমরা বর্ডারে দিয়া আস। আমরা অন্য দেশে চলে যাই।" ভাঙ্গা ঘর নতুন করে গড়ে দেয়ার কেউ নেই , দুই বছরের বাচ্চাটাকে রহিমা বুবুর ছেলেটার সাথে খেলতে দিয়ে ধ্বংসস্তুপে বসে অঝোরে কাঁদেন সজলা মাসীরা। তিনি গ্রামের বধু , তিনি নকশী কাঁথায় জীবনের স্বপ্ন বুনতে পারেন , দুই বছরের সুধাংশুর যেন কোন কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে পারেন , কিন্তু স্বামী কৃষ্ণপাল কে যে জামাত -শিবিরের লোকেরা খুন করে গেল ঘর ভাঙতে বাধা দেয়ার কারণে , এই অভাব তিনি কিভাবে পূরণ করবেন ? রহিমা বুবু কত আদর করে সুধাংশুকে ঘুম পারাচ্ছেন , কই রহিমা বুবুর তো ধর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে না ? তাহলে ঐ সন্ত্রাসীরা কারা , কোন ধর্মের অনুসারি ?
  • নাহ , এত বড় বড় ভাবনা সজলা মাসীদের মাথায় আসার কথা নয়। জন্মই যে তাদের আজন্ম পাপ। জন্মের পর থেকেই দেখে আসছেন বাংলাদেশে দুই দলের ক্ষমতার লড়াই , আর সে লড়াইয়ের বলি সাধারন জনগণ। এদেশের মানুষ যে কোন দলের হরতাল ডেকে সহিংসতা করাকেই সমর্থন করেনা , জীবন রক্ষার জন্য - ককটেলের হাত থেকে বাঁচার জন্য কর্মস্থলে যাওয়া থেকে বিরত থাকে - এই সহজ সত্যটা হয়ত বড় বড় প্রাসাদের দোরগোড়ায় কক্ষনো আঘাত হানবে না। তাই যখন যশোরের মালোপাড়ায় জামাত - শিবিরের হামলার বিরুদ্ধে বড় বড় নেতা - নেত্রীরা এক একজন বিপক্ষকে দোষারোপ আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মহান বুলিসমৃদ্ধ বক্তৃতা দিয়েই মানবতা উদ্ধার করে ফেলছেন , মহাত্মা গান্ধীজির মত পায়ে হেঁটে না হোক , বি এম ডব্লিউ তে চড়ে হলেও সজলা মাসীদের হাতে দুমুঠো খাবার তুলে দেয়ার চিন্তাটুকুও করছেন না - মানবতা তখন সেই ধ্বংস স্তুপের বুকে কেঁদে মরছে। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য , অগ্রহণযোগ্য , সর্বদলীয় , নির্দলীয় , গণতান্ত্রিক , অগণতান্ত্রিক এসব তর্কের মধ্যে আমি যাব না। এসব অনেক উচ্চ পর্যায়ের ব্যাপার , আমার মত মানুষের চিন্তাধারার অনেক উপরে। কিন্তু অন্তত এতোটুকু বুঝি যে বাংলাদেশ হিন্দু - মুসলমান - বৌদ্ধ - খ্রিষ্টান - আওয়ামী লীগ - মার্ক্স পন্থী - লেনিনপন্থী -কৃষক -মজুর -শ্রমিক -ছাত্র -শিক্ষক - পেশাজীবী - বুদ্ধিজীবী সবার মিলিত সংগ্রামের কারণে , মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে। এভাবে সব শ্রেণী , সব মতের মানুষ আবার এক হতে পেরেছিল শাহবাগের মোহনায় , আর সেজন্যই রাজাকারের ফাসি আদায় হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষী - সব চিন্তাধারার বাঙালি এভাবে যখন এক হতে পারে , তখনই আসে কাঙ্খিত মুক্তি।
  • সজলা মাসী যখন কাঁদছেন ভাঙ্গা পুড়ে যাওয়া বাড়িটার ধ্বংসস্তূপে বসে , স্বামীর রক্তে ভেজা মৃতদেহটা বুকে নিয়ে , ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা দুর্জয় তারুন্য আবার এক হচ্ছে প্রজন্ম চত্বরের মোহনায় , যশোরের মালোপাড়ায় জামাত -শিবিরের হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মুখে একটু হাসি ফোটানোর জন্য। হয়ত এত বড় বড় আঘাতের কষ্ট এত সহজে ভোলানো সম্ভব নয় , কিন্তু অন্তত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর মনে বিশ্বাস তো জন্মাবে যে বাংলাদেশের সব মানুষই খারাপ নয়। সজলা মাসীরা হয়ত আবার বিশ্বাস করতে পারবেন মানুষের উপর , হয়ত ভাবতে পারবেন - রহিমা বুবুরা খালি গ্রামে নিরীহ বধু হয়ে নয় , প্রজন্মের মাঝেও আছেন। হয়ত এই ভালোবাসার কারনেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আবার পাবে ঘর বাঁধার শক্তি , সাহায্য। সাভারের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির সময় সারা বাংলাদেশের আপামর জনতা যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেই মৃত্যুকূপ থেকে শেষ জীবনের স্পন্দন টিকে পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখার জন্য , সেভাবে আবার রেডি হচ্ছে প্রজন্ম। ছোট্ট একটা ফেসবুক ইভেন্ট থেকে প্রতিবাদের বহ্নিশিখা অন্তর থেকে অন্তরে ছড়িয়ে গিয়ে যেভাবে জন্ম দিয়েছিল প্রজন্ম চত্বরের , আদায় করে নিয়েছিল রাজাকারের ফাঁসি - ঠিক একইভাবে আবার জাগছে প্রজন্ম , সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো অপশক্তির বিরুদ্ধে। তারুন্যকে বিভ্রান্ত করতে চাওয়া মানুষের অভাব নেই , তাদের কেউ কেউ আবার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মুখোশ পরা। কিন্তু তারুন্যের জন্ম হেরে যাওয়ার জন্য হয়নি। আমরা হেরে যাব বলে স্বপ্ন দেখিনি। তাই জামাত -শিবিরের হামলার শিকার মানুষগুলোকে নতুন করে জীবনের স্বপ্ন দেখাতে , মানবতার পরিচয়ে সব মানুষের বাঁচার দাবি নিয়ে এগিয়ে আসছে গণজাগরণ মঞ্চের সৈনিকেরা।
  • এক গভীর বেদনা, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা এবং ক্ষোভ বুকে নিয়ে আজকে আমরা, গনজাগরণ মঞ্চের তরুণরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা জানেন সারাদেশে গত কয়েকদিন ধরে সাম্প্রদায়িক হামলা এক বীভৎস রূপ ধারণ করেছে। দেশের আনাচে কানাচে ধর্মীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা একশ্রেনীর দুবৃর্ত্তদের রাজনৈতিক লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। গত দুইদিনে যশোর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, ঠাকুরগাঁও সহ সারাদেশে অসংখ্য হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের বসতবাড়িতে হামলা, লুটপাট হয়েছে। তাঁদের বাড়িঘর, সহায় সম্পত্তি ধ্বংস ও লুটপাট করে তাঁদেরকে পথে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। তাঁদের সারাজীবনের অর্জিত সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে, তাঁদের গবাদি পশু ও ফসল লুট করা হয়েছে, নারীদের গায়ের গহনা থেকে পুরুষের মাছ ধরার জাল কিংবা বাচ্চাদের পড়ার বই থেকে শুরু করে রান্না করা খাবার পর্যন্ত- কোনো কিছুই এই তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি। তাঁদের ঘরগুলোকে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রাণভয়ে অসংখ্য মানুষ আজ ঘরছাড়া। নিরাপত্তাহীনতার কারণে তাঁরা নিজেদের বাড়িঘরে ফিরতেও ভয় পাচ্ছেন। এই অসহনীয় পরিস্থিতি একদিনে সৃষ্টি হয়নি। রাজনৈতিক কারণে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলমান এবং বিশেষ করে গত একবছর ধরে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের দ্বারা এই হামলা প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা প্রতিরোধে সারাদেশে প্রশাসনের ব্যর্থতায় আমরা ক্ষুব্ধ। বিভিন্ন স্থানের আক্রান্তদের যে ভাষ্য সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে তাতে করে একথা পরিস্কার যে আক্রান্ত মানুষরা প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পাননি। এই ধরনের হামলার হুমকির বিষয়ে প্রশাসনকে অবগত করা সত্ত্বেও প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রেই ছিল আগাম ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এমনকি হামলার পরে দায়ী ব্যক্তিদেরকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আমরা এসব প্রতিটি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যর্থতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
  • আমাদের পূর্বপুরুষরা রক্ত ও সম্ভ্রমের সর্বোচ্চ ত্যাগ করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এক মহান দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁরা এমন এক দেশ গড়তে চেয়েছিলেন যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকার থাকবে। কোনো বিশেষ মানুষ কিংবা জনগোষ্ঠিকে তাঁদের ধর্মবিশ্বাসের জন্য লাঞ্ছিত ও অবদমিত হয়ে থাকতে হবে না। আজ স্বীকার করতে হচ্ছে যে, আমাদের পূর্বসূরিদের সেই স্বপ্ন এখনও অধরা রয়ে গেছে। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনুপাতের দিকে লক্ষ করলে একথা পরিস্কার যে গত ৪৩ বছরে এই দেশে ধর্মীয় কারণে নির্যাতন কখনোই বন্ধ হয়নি। ধর্মীয় কারণে যে অসংখ্য নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তার কোনটারই কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এই হামলার ঘটনা শুধু উত্তোরত্তর বৃদ্ধিই পেয়েছে। মহান মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তর প্রজন্ম হিসেবে আজকের তরুণ সমাজ তাই মুক্তিযুদ্ধের সেই দায় ও স্বপ্নকে হালকা ভাবে নিতে পারে না বলেই আজকে আমরা আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। আমরা মনে করি সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিষয়টিকে শক্তভাবে মোকাবেলা করতে হবে এবং এর স্থায়ী একটি সমাধান প্রয়োজন। প্রতিটি বড় বড় ঘটনার পরে সাময়িকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ এবং দায়সারা গোছের নাগরিক কর্মসূচির মাধ্যমে এর সমাধান আসবে না। এই ব্যাপারে নাগরিকসমাজ এবং রাষ্ট্রকে নিজ নিজ জায়গা থেকে তাঁদের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা সরকারের কাছে নিম্নোক্ত দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি।
  • সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস রোধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আলাদা আইন প্রণয়ন করতে হবে। সাম্প্রতিক প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও গোষ্ঠিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সারাদেশে আক্রান্ত পরিবারগুলোর ক্ষতি নিরূপন করে তাঁদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।এই দাবিগুলো পূরণ সরকারকে আগামী ১ মাসের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে আমরা ঘোষণা করছি যে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধে আমরা শাহবাগে একটি সমন্বয় সেল গঠন করছি। এই সেল থেকে সারাদেশের দরিদ্র নির্যাতিত পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার জন্য শাহবাগে ত্রান সংগ্রহ করা হবে। এই সেলের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা করার জন্য আমরা দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সেলের পক্ষ থেকে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা সারাদেশে আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করবে। আক্রান্ত পরিবারগুলোকে আমরা প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করবো। এই লক্ষ্যে গণজাগরণ মঞ্চ আগামী ১০ ও ১১ জানুয়ারি ঢাকা থেকে যশোর মালোপাড়া পর্যন্ত “সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধে রোডমার্চ” করবে। একই সঙ্গে সারাদেশের যেসব এলাকায় এমন হামলা হচ্ছে এবং হামলার আশংকা আছে, সেই এলাকাগুলোর জনসাধারণ বিশেষ করে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল তরুণদের নিয়ে আমরা স্থানীয় পর্যায়ে ‘সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’ গঠন করবো। সারাদেশের আগ্রহী তরুণদেরকে সমন্বয় সেলের সাথে যোগাযোগ করবার অনুরোধ জানাচ্ছি, যার ফোন নাম্বার ০১৭৮১-৬২৮১১১।
  • আমরা সকল তরুণ সমাজের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, এই মহান দেশে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করার যে স্বপ্ন আমাদের পূর্বপুরুষরা দেখেছিলেন, আসুন, আমরা সবাই মিলে সেরকম দেশ গড়ে তুলতে এগিয়ে আসি। আমাদের প্রত্যেকের তিলতিল শ্রম আর ত্যাগে একটি সুন্দর সুখী অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে উঠবে, আমাদের সেই স্বপ্নে শামিল হতে সকলের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন আর একবার জেগে উঠি মানবতার জন্য , আমাদের ভাই -বোনদের জন্য। এই বাংলাদেশ আমাদের সবার। সব ধর্মের , সব মতের , সব মানুষের - কোন ধর্মব্যবসায়ী , সন্ত্রাসী , জামাত -শিবিরের না। এই বাংলাদেশ ত্রিশ লাখ শহীদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য উপহার। বাংলা মায়ের বুকে কোনরকম কলঙ্কক্ষত আমরা আর হতে দিতে পারি না। আমি সেই দেশের মানুষ যে দেশে জাতির জনকের চেয়ে বড় কোন নেতা নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে বড় কোন অহংকার নেই ।স্বাধীনতার চেয়ে বড় কোন প্রাপ্তি নেই। দেশের চেয়ে বড় কোন গর্বের ঠিকানা নেই। জাতীয় সংগীতের চেয়ে সুন্দর কোন গান নেই। জন্ম ভুমির চেয়ে পবিত্র কোন মৃত্তিকা নেই। লাল সবুজ পতাকার চেয়ে প্রিয় কোন রং নেই। মানবতার চেয়ে বড় কোন ধর্ম নেই। দেশ প্রেমের চেয়ে বড় কোন কর্ম নেই। শহীদ মিনারের চেয়ে বড় কোন তীর্থ স্থান নেই। কাদার জন্য বধ্যভুমির চেয়ে উপযুক্ত কোন জায়গা নেই। ইতিহাস বিকৃতির চেয়ে ঘৃন্য কোন অপরাধ নেই। যুদ্ধাপরাধীর চেয়ে নষ্ট কোনপ্রানী নেই ।
    https://www.facebook.com/events/1409711639274084/
  • আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালোবাসি। আজ থেকে সংখ্যালঘু শব্দটি বর্জন করলাম। কেউ  লঘিষ্ঠ না , কেউ     গরিষ্ঠ না । এই বাংলাদেশে "না"। জয় বাংলা... জয় বাংলা... জয় বাংলা।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন