প্রভাতী সূর্যের প্রথম কিরণে সূচনা হয় একটি দিবসের। একটি দিন , অল্প কিছু সময় ; তার মধ্যেও কত স্বপ্নের ইতিহাস লেখা হয় কে তার হিসাব রাখবে। সাদা পায়রাগুলো এলোমেলো উড়তে থাকে আকাশ জুড়ে। নীল আকাশটাকে একেবারে আচ্ছন্ন করে রেখেছে কুহেলিকার চাদর। এর মধ্যেই আবছায়ার মত চোখে পরে দূরের গাছপালা , দূরের শহর। শুভ্র মায়াচ্ছাদন ভেদ করে প্রভাতী সূর্যের কিরণ ছড়িয়ে পরেছে নিঝুম ধরণীটিতে। নিদ্রাকাতর পৃথিবী জাগতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে। বারান্দার পাশে নারিকেল গাছটির দুটো পাতার মাঝখান থেকে রাতে উঁকি দিয়েছিল গোল রুপালি থালার মত একটা চাঁদ। এখন সেখানেই সূর্যালোকের রঙিন বর্ণচ্ছটা। এক সুতীব্র আঁধারের পর আলোকের বহ্নিশিখা। সাদা পায়রাদুটি যদি একটু বিশ্রাম নিতে চাঁদের আলোয় এসে বসত নারিকেল গাছটার উপর ; রুপালি চাঁদ আর এই পুরো দৃশ্যকল্পটা কেমন হত ? মনের ক্যানভাসে ধরে রাখতাম চিরকাল সেই ছবিটিকে - যেমনভাবে ধরে রেখেছি প্রজন্ম চত্বরকে।
দূরের শহরটা অনেক বেশি দূরে তো নয়। নদীর ওপারেও হয়ত এপারের মতই লক্ষ দীর্ঘশ্বাসের মাঝে মায়াবী স্বপ্ন বোনে কোন তরুণী। চার দেয়ালের বাইরে পা রাখার একটা স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা। চারপাশে অবিরাম জীবনের প্রবাহ। সংগ্রাম , শুধুই সংগ্রাম চারদিকে। প্রজন্ম চত্বরের সংগ্রাম , মা বাংলাদেশের জন্য। পথে - প্রান্তরে ঘুরে বেড়ানো একটা শিশুর সংগ্রাম , পরিবারের জন্য দুমুঠো অন্ন যোগানোর। চতুর্দিকে বিচিত্র রকম ভালোবাসা , আর সে ভালোবাসার জন্যই অনন্ত সংগ্রাম। এদেশের মানুষগুলোর যে লড়াইয়ের সাথে জন্ম-জন্মান্তরের ভালবাসার সম্পর্ক। জন্মেই শিশুরা এখানে দেখে ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি। অবাক পৃথিবী বারংবার অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রয় ; চারিদিকে এত মৃত্যুর কারবারের মধ্যেও এ মানুষ গুলোর মাথা তুলে দাঁড়ানোর ক্ষমতা দেখে। অবিরাম বোমার আঘাতের মাঝেও প্রজন্ম যোদ্ধারা দুচোখ মেলে এগিয়ে যান লক্ষ্যের দিকে। একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা রক্তমাখা ব্যান্ডেজ মাথায় আবার স্লোগান তোলেন সন্তানের সাথে - জয় বাংলা বলে। এই প্রিয় মাতৃভূমির নাম বাংলাদেশ...
বাংলাদেশ , নিজেই এক অনন্ত অক্ষত ভালবাসার নাম। সহস্র স্বপ্নকে ধারণ করে আজো জেগে থাকা ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের নাম। প্রভাতী সূর্য , রুপালি চাঁদ আর উড়ন্ত দুটি পায়রা - যান্ত্রিকতার শহরের মাঝে এ যে এক অপার বিস্ময়ের ছবি। ছোট্ট সবুজ এ মাতৃভূমির বুকে হয়ত কিছু কালসাপ ছড়াতে চায় বিষবাস্প। খুন করতে চায় সব আশাগুলোকে , সব স্বপ্নগুলোকে। সাদা পায়রাটার নিষ্পাপ দুই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পরতে থাকে রক্ত। সে রক্ত ঐ কালসাপদের জন্য অভিশাপ। ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার জন্ম হয় যোদ্ধাদের। জীবন মায়া তুচ্ছ করে বিষবাস্প সরিয়ে একদিন যোদ্ধারা এনে দেয় ভালবাসার পৃথিবী। সারি সারি সৈনিককে ধন্যবাদ জানায় শুভ্র পায়রাটি। ধন্যবাদ জানায় , তার বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা তরুণীটির হাতে গিয়ে বসে পায়রাটি। যুদ্ধ শেষে আবার গড়ে উঠেছে নতুন পৃথিবী। ফিরে এসেছে প্রাচীন পৃথিবীর প্রাচীন নিয়মনীতিগুলো। সৈনিক মেয়েটি তাই আবার আবদ্ধ চার দেয়ালে। ছোট ছোট সুখ খুঁজে নেয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অবিরাম।
সুরের মূর্ছনায় ভরে উঠতে চাইছে নতুন পৃথিবীটা। আহত মানুষগুলোর পাশে আশার প্রলেপ হয়ে দাঁড়িয়েছে সৈনিকেরা; তাদের এক একটা হাতের মধ্যে মিশে আছে সামজিক নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ শত শত বোনের হাত। নতুন পৃথিবী গড়ে উঠবে মানুষের সাথে মানুষের ভালোবাসায় আর পরম বিশ্বাসে। মানুষ জেনে গেছে সবার উপরে মানুষ বলে একটা পরিচয় আজও বেঁচে আছে ; আর সেই পরিচয়ই বারবার মানুষকে টেনে এনেছে মানুষের কাছে। সবকিছুকে শুরু করতে শিখিয়েছে আবার নতুন করে। বৃষ্টিতে ভেজার অধিকার নেই তরুণীর ;বৃষ্টি দেখার অধিকার তো আছে। হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছোঁয়ার অধিকার তো আছে। জ্যোৎস্নালকিত রাত্রে উন্মুক্ত আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে জয় বাংলা বলে চিৎকার করে ওঠার অধিকার হয়ত নেই ; নিজের ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্বাধীন দেশের আকাশে স্বাধীন চাঁদটার দিকে তাকিয়ে গুনগুন করে আমার সোনার বাংলা গাওয়ার অধিকার তো আছে। দেশটাকে ভালবাসার অধিকার তো আছে । লাল -সবুজ পতাকা বুকে নিয়ে অঝোরে কান্নার অধিকারটাকে কেউ কক্ষনো কেড়ে নিতে পারবে না...
বাংলাদেশের একটি শিশুও জানে যুদ্ধের ভয়ার্ত স্বরূপ। আমরা বাঙালি , মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকারটাও যাদের আদায় করতে হয়েছে সংগ্রাম করে। মা জাহানারা ইমামের স্বপ্নের পথে প্রজন্মের যাত্রা চলবেই। নদীতে বাঁধ দেয়া যায় , কিন্তু সমুদ্রে না। বোমা হামলা করে , আর কেউ মারা যায়নি কেন এই বলে বোমা হামলাকে জায়েজ করার চেষ্টা করে প্রজন্ম চত্বরকে কখনই থামিয়ে রাখা যাবে না। কত যোদ্ধার কত ত্যাগের ইতিহাস যে প্রজন্ম চত্বরের এক একটা ধুলিকনার মধ্যে মিশে আছে , কালসাপেরা তা কখনই বুঝবে না। প্রয়োজনও নেই বোঝার। একজন যোদ্ধার কাছে রনক্ষেত্র যেমন প্রিয় , আমাদের কাছে তেমনি প্রিয় প্রজন্ম চত্বর। যে চেতনার জন্মদান মা জাহানারা ইমাম করে গিয়েছেন , বীর মুক্তিযোদ্ধারা করে গেছেন , বীরাঙ্গনা মায়েরা করে গেছেন - মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সে মশাল আর কক্ষনো নিভবে না। হতাশের পাশে দাঁড়াবে আশার প্রদীপ হয়ে , দুর্বলের বুকে জন্ম দেবে যোদ্ধার সাহস। প্রতি ঘরে ঘরে এক একটি মশাল জ্বলে উঠেছে আজ। সারা বাংলাদেশটা আলোকিত হতে খুব বেশি দেরি নেই ...
হাত দিয়ে বল সূর্যের আলো কি রুধিতে পারে কেউ ?
আমাদের মেরে ঠেকানো যাবে না গণজোয়ারের ঢেউ।
জয় বাংলা... জয় বাংলা... জয় বাংলা।
দূরের শহরটা অনেক বেশি দূরে তো নয়। নদীর ওপারেও হয়ত এপারের মতই লক্ষ দীর্ঘশ্বাসের মাঝে মায়াবী স্বপ্ন বোনে কোন তরুণী। চার দেয়ালের বাইরে পা রাখার একটা স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা। চারপাশে অবিরাম জীবনের প্রবাহ। সংগ্রাম , শুধুই সংগ্রাম চারদিকে। প্রজন্ম চত্বরের সংগ্রাম , মা বাংলাদেশের জন্য। পথে - প্রান্তরে ঘুরে বেড়ানো একটা শিশুর সংগ্রাম , পরিবারের জন্য দুমুঠো অন্ন যোগানোর। চতুর্দিকে বিচিত্র রকম ভালোবাসা , আর সে ভালোবাসার জন্যই অনন্ত সংগ্রাম। এদেশের মানুষগুলোর যে লড়াইয়ের সাথে জন্ম-জন্মান্তরের ভালবাসার সম্পর্ক। জন্মেই শিশুরা এখানে দেখে ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি। অবাক পৃথিবী বারংবার অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রয় ; চারিদিকে এত মৃত্যুর কারবারের মধ্যেও এ মানুষ গুলোর মাথা তুলে দাঁড়ানোর ক্ষমতা দেখে। অবিরাম বোমার আঘাতের মাঝেও প্রজন্ম যোদ্ধারা দুচোখ মেলে এগিয়ে যান লক্ষ্যের দিকে। একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা রক্তমাখা ব্যান্ডেজ মাথায় আবার স্লোগান তোলেন সন্তানের সাথে - জয় বাংলা বলে। এই প্রিয় মাতৃভূমির নাম বাংলাদেশ...
বাংলাদেশ , নিজেই এক অনন্ত অক্ষত ভালবাসার নাম। সহস্র স্বপ্নকে ধারণ করে আজো জেগে থাকা ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের নাম। প্রভাতী সূর্য , রুপালি চাঁদ আর উড়ন্ত দুটি পায়রা - যান্ত্রিকতার শহরের মাঝে এ যে এক অপার বিস্ময়ের ছবি। ছোট্ট সবুজ এ মাতৃভূমির বুকে হয়ত কিছু কালসাপ ছড়াতে চায় বিষবাস্প। খুন করতে চায় সব আশাগুলোকে , সব স্বপ্নগুলোকে। সাদা পায়রাটার নিষ্পাপ দুই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পরতে থাকে রক্ত। সে রক্ত ঐ কালসাপদের জন্য অভিশাপ। ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার জন্ম হয় যোদ্ধাদের। জীবন মায়া তুচ্ছ করে বিষবাস্প সরিয়ে একদিন যোদ্ধারা এনে দেয় ভালবাসার পৃথিবী। সারি সারি সৈনিককে ধন্যবাদ জানায় শুভ্র পায়রাটি। ধন্যবাদ জানায় , তার বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা তরুণীটির হাতে গিয়ে বসে পায়রাটি। যুদ্ধ শেষে আবার গড়ে উঠেছে নতুন পৃথিবী। ফিরে এসেছে প্রাচীন পৃথিবীর প্রাচীন নিয়মনীতিগুলো। সৈনিক মেয়েটি তাই আবার আবদ্ধ চার দেয়ালে। ছোট ছোট সুখ খুঁজে নেয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অবিরাম।
সুরের মূর্ছনায় ভরে উঠতে চাইছে নতুন পৃথিবীটা। আহত মানুষগুলোর পাশে আশার প্রলেপ হয়ে দাঁড়িয়েছে সৈনিকেরা; তাদের এক একটা হাতের মধ্যে মিশে আছে সামজিক নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ শত শত বোনের হাত। নতুন পৃথিবী গড়ে উঠবে মানুষের সাথে মানুষের ভালোবাসায় আর পরম বিশ্বাসে। মানুষ জেনে গেছে সবার উপরে মানুষ বলে একটা পরিচয় আজও বেঁচে আছে ; আর সেই পরিচয়ই বারবার মানুষকে টেনে এনেছে মানুষের কাছে। সবকিছুকে শুরু করতে শিখিয়েছে আবার নতুন করে। বৃষ্টিতে ভেজার অধিকার নেই তরুণীর ;বৃষ্টি দেখার অধিকার তো আছে। হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছোঁয়ার অধিকার তো আছে। জ্যোৎস্নালকিত রাত্রে উন্মুক্ত আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে জয় বাংলা বলে চিৎকার করে ওঠার অধিকার হয়ত নেই ; নিজের ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্বাধীন দেশের আকাশে স্বাধীন চাঁদটার দিকে তাকিয়ে গুনগুন করে আমার সোনার বাংলা গাওয়ার অধিকার তো আছে। দেশটাকে ভালবাসার অধিকার তো আছে । লাল -সবুজ পতাকা বুকে নিয়ে অঝোরে কান্নার অধিকারটাকে কেউ কক্ষনো কেড়ে নিতে পারবে না...
বাংলাদেশের একটি শিশুও জানে যুদ্ধের ভয়ার্ত স্বরূপ। আমরা বাঙালি , মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকারটাও যাদের আদায় করতে হয়েছে সংগ্রাম করে। মা জাহানারা ইমামের স্বপ্নের পথে প্রজন্মের যাত্রা চলবেই। নদীতে বাঁধ দেয়া যায় , কিন্তু সমুদ্রে না। বোমা হামলা করে , আর কেউ মারা যায়নি কেন এই বলে বোমা হামলাকে জায়েজ করার চেষ্টা করে প্রজন্ম চত্বরকে কখনই থামিয়ে রাখা যাবে না। কত যোদ্ধার কত ত্যাগের ইতিহাস যে প্রজন্ম চত্বরের এক একটা ধুলিকনার মধ্যে মিশে আছে , কালসাপেরা তা কখনই বুঝবে না। প্রয়োজনও নেই বোঝার। একজন যোদ্ধার কাছে রনক্ষেত্র যেমন প্রিয় , আমাদের কাছে তেমনি প্রিয় প্রজন্ম চত্বর। যে চেতনার জন্মদান মা জাহানারা ইমাম করে গিয়েছেন , বীর মুক্তিযোদ্ধারা করে গেছেন , বীরাঙ্গনা মায়েরা করে গেছেন - মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সে মশাল আর কক্ষনো নিভবে না। হতাশের পাশে দাঁড়াবে আশার প্রদীপ হয়ে , দুর্বলের বুকে জন্ম দেবে যোদ্ধার সাহস। প্রতি ঘরে ঘরে এক একটি মশাল জ্বলে উঠেছে আজ। সারা বাংলাদেশটা আলোকিত হতে খুব বেশি দেরি নেই ...
হাত দিয়ে বল সূর্যের আলো কি রুধিতে পারে কেউ ?
আমাদের মেরে ঠেকানো যাবে না গণজোয়ারের ঢেউ।
জয় বাংলা... জয় বাংলা... জয় বাংলা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন